শান্তিপুরে শোভাযাত্রা থেকে মহিলার গায়ে মদ, ৪ জন গ্রেপ্তার
বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকে মহিলার গায়ে কুলকুচি করে মদ ফেলা এবং মারধরের ঘটনায় শেষমেশ সক্রিয় হল পুলিস। তদন্তে নেমে তারা চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হেনস্তা, মারধর সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সোমবার ধৃতদের তোলা হয়েছিল রানাঘাট মহকুমা আদালতে। সেখানে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
মূল ঘটনাটি ঘটে কালীপুজোর ঠিক পরদিন। শান্তিপুরের শ্যামবাজার এলাকায় সেই সময় পরপর তিনটি প্রতিমা নিরঞ্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। প্রতিটি প্রতিমার সঙ্গেই ছিল নিজ নিজ শোভাযাত্রা। ঘটনাচক্রে সেই সময় ওই শোভাযাত্রাগুলির পাশ দিয়েই বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। অভিযোগ, শোভাযাত্রা থেকে তখন মদ ছোঁড়া হচ্ছিল। স্বাভাবিকভাবেই গায়ে মদ পড়ায় প্রতিবাদ করেন ওই দম্পতি। কিন্তু তাতে ফল হয় উল্টো। শোভাযাত্রা থেকে এক যুবক মুখের ভিতরে থাকা মদ কুলকুচি করে ফের ছিটিয়ে দেয় ওই মহিলার গায়ে। এরপর তাঁর স্বামী ফের প্রতিবাদ করলে মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয় ওই মহিলাকেও। ঘটনার পর শান্তিপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় আক্রান্ত মহিলাকে। পাশাপাশি শান্তিপুর থানাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
যদিও ঘটনার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি শান্তিপুর থানা। অবশেষে রবিবার রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় তারা। ধৃতদের নাম দীপক রাজবংশী, পাঁচুগোপাল মণ্ডল, ভজন বিশ্বাস এবং সাধন বিশ্বাস। ধৃতরা প্রত্যেকেই শান্তিপুরের বাগচীর বাগান এলাকার বাসিন্দা।
কী কারণে তারা দ্বিতীয়বার মুখের থেকে মদ মহিলার গায়ে কুলকুচি করে ছুড়ল এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রায় একজন মহিলাকে কেন নিগৃহীত হতে হল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। যদিও পুলিস ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই ঘটেছিল ঘটনাটি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ধৃত চারজনকেই সোমবার তোলা হয়েছিল রানাঘাট মহাকুমা আদালতে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা কেউই পুজো কমিটির সক্রিয় সদস্য নয়, তবে স্থানীয় বাসিন্দা। সেই সুবাদেই বিসর্জন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল তারা। বাকি ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত।