• জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে দুর্দশা, ট্রলি ঠেলতে হল রোগীর পরিবারের মহিলাদেরকে
    বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মেডিক্যালে দেখা নেই ওয়ার্ডবয়দের। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও তাঁদের পাত্তা না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রলি ঠেললেন রোগীর পরিবারের মহিলারা। সোমবার সকালের এই ছবি বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের পরিষেবা নিয়ে। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এক্স রে, সিটি স্ক্যানে নিয়ে যাওয়ার দরকার হোক কিংবা অন্য হাসপাতালে রেফার, বেশিরভাগ সময়ই ডাকাডাকি করেও ওয়ার্ডবয়দের দেখা পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ওয়ার্ড থেকে রোগীকে ট্রলিতে চাপিয়ে তারপর সেটি ঠেলতে ঠেলতে বাইরে নিয়ে আসতে হয় পরিজনদেরই। সঙ্গে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা না থাকলে ট্রলি ঠেলে রোগীকে ওয়ার্ড থেকে নীচে নিয়ে আসা কিংবা নীচ থেকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার কাজ করতে হয় মহিলাদেরই। এমনকী মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বের করার সময়ও ট্রলি ঠেলতে হয় বাড়ির লোকজনকেই। কখনও নামমাত্র একটু হাত ছুঁইয়েই ‘বেপাত্তা’ হয়ে যান ওয়ার্ডবয়।

    সোমবার তখন বেলা সাড়ে এগারোটা। মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আশুবালা সরকার নামে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত সত্তর বছরের এক বৃদ্ধাকে শুইয়ে ট্রলি ঠেলে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে নীচে নামাচ্ছেন পরিবারের দুই মহিলা। ট্রলি ঠেলতে গিয়ে একজন পা পিছলে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হন। কোনওমতে নিজেকে সামলে নিয়ে রক্ষা পান তিনি। ওয়ার্ড থেকে নীচে নামানোর পর জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে দুই মহিলাকে ট্রলি ঠেলে রোগীকে বের করতে দেখেও এগিয়ে আসেননি হাসপাতালের কোনও কর্মী কিংবা গেটে মোতায়েন হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা। মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খাঁ বলেন, এমনটা হওয়ার কথা নয়। যথেষ্ট সংখ্যায় ওয়ার্ডবয় রয়েছে আমাদের। রোগীর পরিবারের উদ্দেশে বলব, ওয়ার্ডে নার্সদেরই বললে ওঁরাই ওয়ার্ডবয় ডেকে দেবেন।

    যদিও এদিনের ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ময়নাগুড়ির ডাউকিমারির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা রোগীর মেয়ে ঝর্ণা মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, এদিন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে রোগীকে ট্রলিতে তুলে আমাদেরই ঠেলতে ঠেলতে নীচে নিয়ে আসতে হয়। আমাদের তো ট্রলি ঠেলে নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস নেই। কয়েকবার হোঁচটও খেয়েছি। ডাকাডাকি করেও ওয়ার্ডবয়ের খোঁজ পাইনি। জাহিদ আলি নামে মেডিক্যালের এক ওয়ার্ডবয় বলেন, এদিন আমরা নীচে দু’জন ছিলাম। দু’জনের পক্ষে সবটা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।
  • Link to this news (বর্তমান)