• কোচ জয়ন্তকে ফোন, শেষ ম্যাচে মাঠে থাকার অনুরোধ পাপালির
    বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
  • সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: রবিবার বিকেলে ফোনটা এসেছিল। স্ক্রিনে তাকাতেই দেখেন পাপালি নামটি ভেসে উঠছে। খেলা থাকলে প্রতিদিন ওই সময়ে ভুলত্রুটি নিয়ে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় টিপসের জন্য পাপালি অর্থাৎ ঋদ্ধিমান সাহা তাঁর কোচ জয়ন্ত ভৌমিককে ফোন করেন। সেরকম কিছু ভেবেই রিসিভ করেছিলেন জয়ন্ত। কিন্তু প্রিয় ছাত্রের কাছ থেকে যে কথা শোনেন, তাতে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। সোমবার জয়ন্ত বলেন, ‘পাপালি আমাকে বলে, ভাইদা, রনজির পর ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোমাকে জানিয়ে রাখলাম। হয়তো পাঞ্জাবের সঙ্গে আমার শেষ ম্যাচ হবে। তুমি সেদিন কিন্তু অবশ্যই মাঠে থাকবে।’

    কোচের সঙ্গে কথা বলার পরই রবিবার এক্স হ্যান্ডলে অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন ঋদ্ধি। প্রিয় ছাত্রের কথা বলতে গিয়ে গলা ভার হয়ে আসে জয়ন্তর। অবসরের খবর শোনার পর থেকেই মন ভালো নেই। এই জাতীয় তারকার ছেলেবেলার কোচ বলেন, ‘একটা সময় প্রত্যেককেই থামতে হয়। বয়স, ফিটনেসের দিক থেকে হয়তো ঋদ্ধিমান মনে করেছে এখনই অবসর নেওয়ার সঠিক সময়। এ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। খারাপ লাগছে বঞ্চনার যন্ত্রণা নিয়ে পাপালিকে ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। পাপালি বরাবরই খুব কম কথা বলে। তাই ওর যন্ত্রণার কথা সেভাবে প্রকাশ পায়নি। তবে আমি সেটা জানি।’ ২০২১ সালে শেষবার টেস্টের আসরে দেখা গিয়েছিল ঋদ্ধিকে। তারপর জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর জন্য। থেমে যেতে হয় ৪০ টেস্ট খেলেই। প্রিয় ছাত্রের যন্ত্রণা প্রসঙ্গে জয়ন্তর মন্তব্য, ‘দেশকে পাপালির আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। সেই  যোগ্যতা এবং ফর্ম ওর ছিল। রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, সৈয়দ কিরমানির  মতো তারকারা ওকে বিশ্বের সেরা উইকেটকিপারের স্বীকৃতি দিয়েছেন। অসময়ে জাতীয় দল থেকে ওকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। সেটাই যন্ত্রণার।’  

    শিলিগুড়ির মতো একটি মফস্বল শহর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরার পুরো কৃতিত্ব ছাত্রকে দিয়েছেন জয়ন্ত। স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে বাবার হাত ধরে, পরে নিজেই সাইকেল চালিয়ে শক্তিগড় থেকে আমাদের অগ্রগামী ক্যাম্পে আসত পাপালি। ওর বাবা প্রশান্ত সাহা ভালো গোলকিপার এবং উইকেটকিপার ছিলেন। যতদিন গিয়েছে, প্রতিভা দিয়ে নিজেকে মেলে ধরেছে ও।  পুলকদার মতো কোচ কলকাতা থেকে নিয়মিত আসতেন আমাদের ক্যাম্পে। প্রথম দিনই পাপালিকে দেখে তিনি আমাকে বলেছিলেন, এই ছেলেটা একদিন ইন্ডিয়া খেলবে। ঋদ্ধিমান তার মর্যাদা রেখেছে। ওর অবসরের কথা শুনে এই বেদনা হতো না, যদি ঠিকমতো খেলতে দেওয়া হতো। আশা করব, আগামী দিনেও ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকবে শিলিগুড়ির গর্ব পাপালি।’  কোচ জয়ন্তর সঙ্গে ঋদ্ধিমান। - ফাইল চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)