নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘটনার প্রায় তিন মাস পর, আগামী সোমবার (১১ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে আর জি কর-কাণ্ডের বিচারপর্ব। শুনানি চলবে রোজ। আর জি করের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সোমবার শিয়ালদহ জেলা ও দায়রা আদালতে চার্জ গঠন হয়েছে। তারপরই জানা গিয়েছে বিচার শুরুর নির্দিষ্ট দিনক্ষণ।
এই মামলায় গত ৭ অক্টোবর শিয়ালদহ এসিজেএম আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। তাতে অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়ের নাম রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ‘কগনিজেন্স’ নেওয়ার পর মামলা যায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের কাছে। ৪ নভেম্বর চার্জ গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে আগেই জানিয়েছিল আদালত। সেইমতো এদিন বেলা ১১টা নাগাদ সঞ্জয়কে আদালতে আনা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৬, ১০৩ (১) ৬৪ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। আদালত থেকে বেরনোর সময় সঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। সে বলে, ‘এতদিন চুপ করেছিলাম। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট ভয় দেখাচ্ছে। আমাকে মুখ না খুলতে বলা হয়েছে।’
এদিকে, জেল হেফাজত শেষে এদিন ভার্চুয়ালি এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হয় আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘কিছু তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এসেছে। ঘটনার পর সন্দীপ টালা থানার ওসিকে ফোন করেছেন। তারপরেও এফআইআর করতে দেরি হয়েছে। চার্জ গঠন হলেও তদন্ত শেষ হয়নি। বিএনএসের নিয়ম অনুযায়ী সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে ৬০ দিনের মধ্যে।’ আদালতকে তিনি আরও জানান, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স মিলেছে। তবে চার্জশিটে তাঁরা কখনও বলেননি যে সঞ্জয় একাই যুক্ত। আর কারা ছিল, তা জানতে তদন্ত চলছে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তদন্ত চলছে অভিজিৎ ও সন্দীপের বিরুদ্ধে। কাউকেই ক্লিনচিট দেওয়া হচ্ছে না। পাল্টা অভিজিৎ ও সন্দীপ ঘোষের আইনজীবীরা বলেন, ‘ঘটনার পর অধ্যক্ষ সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ফোন করবেন, এটা তো স্বাভাবিক। এর সঙ্গে ষড়যন্ত্রের যোগ কোথায়? তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কী প্রমাণ রয়েছে?’ উভয় পক্ষের সওয়ালের পর আদালত সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
শিয়ালদহ আদালতে আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়।-নিজস্ব চিত্র