পুরনো বাস বাতিল হবে কি? রাজ্যের জবাব তলব হাইকোর্টের
বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহর ও শহরতলির বিভিন্ন রুটে ১৫ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ কয়েক হাজার বাস বাতিল হতে চলেছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। এর ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আবহে বাস বাতিল সংক্রান্ত রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি পুনর্বিবেচনার যোগ্য কি না, তা জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শহরাঞ্চলে দূষণের কথা মাথায় রেখে বাসের মেয়াদ আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছিল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল। ওই নির্দেশিকার পর কলকাতা হাইকোর্ট-সহ দেশের একাধিক হাইকোর্ট বেসরকারি বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচলের মেয়াদ ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁধে দিয়েছে। সেই সূত্রেই ১৫ বছরের পুরনো বাস, লরি, ট্যাক্সি, অটো চলাচল নিষিদ্ধ করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার।
এই অবস্থায় ২৪ নম্বর রুটের বাসমালিকরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সোমবার বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাকারীদের তরফে দাবি করা হয়, রাজ্য সরকারের জারি করা নির্দেশিকার ভিত্তিতে চলতি মাসেই বাতিল হতে চলেছে ২৪ নম্বর রুটের প্রায় ৩৯টি বাস। আগামী মার্চের মধ্যে প্রায় ১৫০০ বাস বাতিল হয়ে যাবে। তাদের আরও বক্তব্য, করোনার সময় দু’বছর সেভাবে বাস চালানো সম্ভব হয়নি। তাই বিজ্ঞপ্তি পুনর্বিবেচনার দাবি করা হচ্ছে। এই দাবির প্রেক্ষিতেই রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তি পুনর্বিবেচনা সম্ভব কি না, তা আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়।
পরিবহণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শেষে সব মিলিয়ে প্রায় ৭৫০টি বাস বসে যেতে চলেছে। বছরের শেষে সংখ্যাটা ১৫০০-র কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াবে। একসঙ্গে এত বাস রাস্তা থেকে উবে গেলে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে। সূত্রের খবর, করোনার আগে কলকাতায় প্রতিদিন ৪,৮৪০টি বেসরকারি বাস ও ২,০৬৪টি মিনিবাস চলত। করোনা পরবর্তী সময়ে সেই সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এখন শহরের রাস্তায় মোট ৩,৬১৫টি বেসরকারি বাস চলে। মিনিবাসের সংখ্যাও এই মুহূর্তে কমতে কমতে ১৪৯৮-এ ঠেকেছে। তার উপর আরও ১৫০০ বাস বসে গেলে চাপ যে অনেকটাই বাড়বে, তা স্পষ্ট। বাসমালিক সংগঠনগুলির একাংশের দাবি, জ্বালানির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালের পর বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেওয়া হয়নি। তাই অবিলম্বে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে বাস বাতিলের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের এদিনের নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।