• ১৩০০ আবেদনের মধ্যে নেই ওপার বাংলার চিঠি, বইমেলায় শূন্য বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন!
    বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
  • রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: অক্টোবর মাসজুড়ে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ থেকে একটিও আবেদন আসেনি। এই পরিস্থিতিতে আগামী জানুয়ারি মাসে শুরু হতে চলা আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন’ থাকবে কি না, উঠে গিয়েছে সেই প্রশ্ন। গিল্ড কর্তাদের বক্তব্য, ‘ওরা আগ্রহ না দেখালে আমাদের কিছু করার নেই।’

    ২০২৫ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কলকাতা বইমেলা। সল্টলেকে বইমেলা প্রাঙ্গণে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২৮ জানুয়ারি উদ্বোধন। তার আগে বইমেলা নিয়ে পুরোদস্তুর কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। কর্তৃপক্ষের তরফে তিন অক্টোবর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে—প্রকাশক, পুস্তক বিক্রেতা, লিটল ম্যাগাজিন বিভাগে অংশগ্রহণের জন্য নিজস্ব লেটার হেডে দরখাস্ত করতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে  নাম, ঠিকানা, স্টল বা টেবিলের মাপ, মেলার সকল নিয়মবিধি মেনে চলার সম্মতিপত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। দরখাস্ত জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ অক্টোবর। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কাছ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রায় এক হাজার ৩০০ আবেদনপত্র এসেছে। গতবার এক হাজার ৫০টির মতো স্টল হয়েছিল। এবার তার আশপাশেই থাকবে স্টলের সংখ্যা। যে আবেদনপত্রগুলি এসেছে, তা খুঁটিয়ে দেখে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিচার-বিশ্লেষণ করে কোন প্রকাশনা সংস্থা স্টল পাবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

    লক্ষ্যণীয় হল, যে ১৩০০টির মতো আবেদনপত্র এসেছে, তাতে বাংলাদেশের কোনও প্রকাশনা সংস্থার নাম নেই। এমনকী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকেও সোমবার পর্যন্ত কোনও আবেদনপত্র আসেনি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিন্ডের কাছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, ২০২৫ সালের বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন কি থাকছে না? এর উত্তরে গিল্ড কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পুস্তক মেলায় অংশগ্রহণের জন্য যে সমস্ত ইচ্ছুক প্রকাশনা সংস্থা আবেদন করেছে, তাতে বাংলাদেশ থেকে কিছু আসেনি। এই পরিস্থিতিতে আমরা আগ বাড়িয়ে কোনও চিঠি দেব না। ওদের কাছ থেকে চিঠি এলে তা আমরা ভারত সরকার ও রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাব। সরকারের সিদ্ধান্ত মতো এগনো হবে।’ 

    অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতি এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের ঘটনা সকলেরই জানা। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার চলছে। সেখানকার পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে এমন বলছে না ওয়াকিবহাল মহল। বিক্ষিপ্ত-অশান্তির ঘটনা প্রায়শই সামনে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের তরফে চিঠি না আসা পর্যন্ত কলকাতা বইমেলায় তাদের প্যাভিলিয়ন ‘অনিশ্চিত’ জায়গাতেই রয়েছে। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কর্তা সুধাংশুশেখর দে জানান, এবারে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।  এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকেও আমাদের কাছে কোনও চিঠি আসেনি। ফলে বাংলাদেশ থেকে চিঠি না এলে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন আদৌ হবে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।-ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)