প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সিঁথির মোড়ে রমরমিয়ে চলছে একাধিক অবৈধ দোকান
বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দুর্গাপুজোর সময় সিঁথির মোড়ে বি টি রোডের ধারে ফুটপাত দখল করে বসেছিল নতুন নতুন দোকান। টাকার বিনিময়ে ওইসব দোকান বসানোর অভিযোগ উঠেছিল এলাকার বাহুবলিদের বিরুদ্ধে। ওইসব অবৈধ দোকান তুলে দিতে বৈঠক করেছিলেন বিধায়ক। কিন্তু প্রশাসনিক গড়িমসির কারণে এখনও বহাল তবিয়তে চলছে ওইসব দোকান। এ নিয়ে বরানগরে তীব্র গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বহু বেকার যুবক বলছেন, ছটপুজোর পর আমরা ফাঁকা জায়গা দেখে দোকান বসানোর উদ্যোগ নেব। সেক্ষেত্রে পুরসভা, প্রশাসন ও পুলিস এমন নিষ্পৃহ থাকে কি না, দেখব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজোর সময় সিঁথির মোড়ে প্রচুর অস্থায়ী দোকান বসেছিল। সকলে ভেবেছিলেন সিঁথি সার্কাস ময়দান লাগোয়া বি টি রোডের ধারেও হয়তো তেমন দোকান বসেছে। কিন্তু পুজো মিটতেই প্রকাশ্যে আসে সরকারি জায়গা দখলের পরিচিত ছক। রীতিমতো টিন, ত্রিপল, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে স্থায়ী দোকান তৈরি করা হয়েছে। অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। কোথাও চা-পান বিক্রি হচ্ছে, কোথাও শীতের কম্বলের পসরা সাজানো হয়েছে। দোকানিরাই বলছেন, ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁরা ওই জায়গায় দোকান বসিয়েছেন। এ নিয়ে শহরজুড়ে হইচই শুরু হওয়ায় আসরে নামেন বিধায়ক। তিনি পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। সোমবারও দেখা গিয়েছে ওইসব দোকানে রমরমিয়ে চলছে ব্যবসা। পুরসভার দাবি, জায়গাটি পূর্তদপ্তরের। ব্যবস্থা নিলে তারা নেবে। পূর্তদপ্তর জানিয়েছে, বারাকপুরের দিক থেকে দখলদারদের নোটিস ধরানো শুরু হয়েছে। এদিকেও নোটিস দেওয়া হবে। গোটা পর্বে পুলিস দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
এদিন সিঁথির মোড়ের এক চায়ের দোকানে যুবকদের আলোচনাতেও উঠে এসেছে নতুন দোকান তৈরির গল্প। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবকরা বলেন, দাদা আমরাও বেকার। হাতে কাজ নেই। বি টি রোডের ধারে সামান্য জায়গা পেলে আমরাও ব্যবসা শুরু করব। এখানে জায়গা বিক্রি হবে আগে জানতে পারলে যোগাযোগ করতে পারতাম। তবে এখনও ফাঁকা জায়গা পড়ে রয়েছে। মনে হচ্ছে, নতুন দোকানগুলি পাকাপাকিভাবে থেকে যাবে। ছটপুজো হয়ে গেলে বাকি ফাঁকা জায়গায় টেবিল-চেয়ার পেতে দোকান শুরু করব।
বরানগর পুরসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিক বলেন, ওই জায়গা পূর্ত দপ্তরের। তারাই পদক্ষেপ নিতে পারবে। এক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি? পূর্তদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বারাকপুরে রাস্তার ধারে দখলদারদের সরাতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এখানেও তা করা হবে। বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোনও অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। পুরসভার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে কিছুটা সময় লাগবে।