নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বেলগাছিয়া ভাগাড়ের রাস্তা মেরামতির জন্য দু’দিন গোটা শহরেই ভ্যাট পরিষ্কারে বিলম্ব হবে। সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাওড়া পুরসভা। আর তারপর থেকে সেই পোস্টের নীচে মন্তব্যের জায়গা বা কমেন্ট সেকশন কার্যত কমপ্লেইন বক্সে পরিণত হয়েছে। শহরের অজস্র ভ্যাট সময়মতো সাফাই হয় না এবং পুরসভা এ ব্যাপারে উদাসীন বলে অভিযোগ করে ধেয়ে আসছে একের পর এক মন্তব্য। কোনওটিতে পুরসভাকে কাটগড়ায় তোলা হয়েছে সরাসরি, কোনও মন্তব্যে আবার তীব্র কটাক্ষও করা হয়েছে পুরসভার ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে। রীতিমতো ওয়ার্ড ও এলাকার নাম উল্লেখ করে নিত্যদিনের দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন নেটিজেনরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডের রাস্তা মেরামতির কাজ চলবে। তাই সোমবার ও মঙ্গলবার হাওড়া শহরের ১ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের ভ্যাটগুলি সাফাই করতে দেরি হবে। বুধবার থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এই পোস্টের নীচে জনৈকা বন্দনা দাস লিখেছেন, ‘৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডাস্টবিন বহুদিন আগেই ভেঙে গিয়েছে। পুরসভাকে বারবার বলার পরেও কাজ হয়নি। রাস্তার উপরেই বাধ্য হয়ে আবর্জনা ফেলতে হচ্ছে। দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে।’ আত্রেয়ী মুখোপাধ্যায় নামে এক নাগরিকের মন্তব্য, ‘গত কয়েক মাস ধরে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের ভ্যাট পরিষ্কার হয় না। দুর্গন্ধে রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না।’
১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধুসূদন লেনের নিকাশিতে কীভাবে রাশি রাশি আবর্জনা মিশছে, তার ছবি কমেন্ট বক্সে পোস্ট করেছেন সৌমেন ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। তিনি লিখেছেন, ‘এই নোংরা মাড়িয়েই প্রতিদিন স্কুলে বাচ্চাদের যাতায়াত করতে হয়।’ হাওড়ার প্রায় সব এলাকা থেকেই কমবেশি এরকম মন্তব্য এসেছে। তবে শুধু ভ্যাট পরিষ্কারই নয়, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও নাগরিকরা যে বেজায় অসন্তুষ্ট, স্পষ্ট হয়েছে কমেন্ট সেকশন থেকে। শুভাশিস দাস নামে এক বাসিন্দা মন্তব্য করেছেন, ‘বাবুডাঙা থেকে টি এল জয়সওয়াল হাসপাতাল পর্যন্ত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জি টি রোডের নিকাশি দিনের পর দিন পরিষ্কার হয় না। এলাকা বসবাসের যোগ্য নয়।’
পুর-পরিষেবা নিয়ে মানুষের এই অসন্তোষের বিষয়ে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘নাগরিকদের ক্ষোভ ন্যায্য। ভ্যাট পরিষ্কার নিয়ে ধাপে ধাপে অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। খানিকটা সময় লাগবে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’ তাঁর আরও দাবি, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আবর্জনা সংগ্রহের গাড়ি ঘুরলেও বাসিন্দাদের অনেকে সেখানে ময়লা ফেলেন না। ফলে সব আবর্জনা নিকাশিনালায় গিয়ে পড়ছে। তাই সবার আগে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা।