বিদেশে জিন থেরাপির আবিষ্কারের পরে এই পদ্ধতি আমেরিকার এফডিএ (ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-র অনুমোদন পায়। তখন বিশ্বের অন্য দেশগুলি অনুমোদন দেয়নি। তাই প্রস্তুতকারী সংস্থা, গ্লোবাল ম্যানেজড অ্যাকসেস প্রোগ্রাম (জিএমএপি)-এর মাধ্যমে বিশ্বের ৩৬টি দেশ বিনামূল্যে এই থেরাপি দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। এত দিন এই থেরাপি ভারতে কেউ কিনতে চাইলে, তাঁকে আমদানি করতে হত। সূত্রের খবর, দ্রুত এ দেশের অনুমোদন পেতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নথিও জমা করেছে সংস্থা। সেটি মিললেই ভারতে বিক্রি হবে ওই থেরাপি। চিকিৎসকদের দাবি, আমদানি শুল্ক মকুব হলে দাম কিছুটা কমবে ঠিকই, তবে তা-ও থাকবে সাধারণের নাগালের বাইরেই।
পূর্ব মেদিনীপুরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারে জন্ম এই শিশুটির। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, শিশুটির যখন ছ’মাস বয়স, তখন তার মা প্রথম লক্ষ করেন যে, সে পা ঘোরাতে বা তুলতে পারছে না। নিজে পা তুললেও তা খুব আস্তে আস্তে। তাকে নিয়ে স্থানীয় শিশুরোগ চিকিৎসকের কাছে যায় পরিবার। চিকিৎসক শিশুটির সমস্যা অনুমান করে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য পাঠান পরিবারটিকে। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, এসএমএ টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত ওই সাত মাসের শিশুটি।
এর পরেই পিয়ারলেস হাসপাতালের বিরল রোগের ক্লিনিকে শিশুটিকে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানেই শুরু হয় তাকে বিনামূল্যে জিন থেরাপি পাওয়ানোর প্রক্রিয়া। একের পর এক নিয়মের বেড়া টপকে অনুমোদন পায় সে। সেই মতো এ দিন মেলে থেরাপি।
সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক সংযুক্তা দে বলেন, ‘‘পূর্ব ভারতে এখনও পর্যন্ত তিন জন শিশু এই থেরাপি পেয়েছে। দু’জন এই হাসপাতাল থেকে এবং এক জন এন আর এস হাসপাতাল থেকে। এখনও সাত থেকে ১৫ মাসের তিনটি শিশু থেরাপি পাওয়ার যোগ্য। দু’বছরের কমবয়সিদের এই থেরাপি দিলে কার্যকারিতা বেশি বোঝা যায়। তাই চেষ্টা করছি ওদের জন্য ক্রাউড ফান্ডিং করে টাকা জোগাড় করার।’’ কিয়োর এসএমএ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার সহ-প্রতিষ্ঠাতা মৌমিতা ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারের কাছে আবেদন, দ্রুত ওষুধের অনুমোদন দিক তারা। সাধারণ পরিবারের বাচ্চারাও যাতে এটি পায়, সে দিকে নজর দিক। পাশাপাশি জিন থেরাপির গবেষণা নিয়ে আরও ভাবুক সরকার।’’