দেবীর বিসর্জনের পর রাস্তায় পায়ের ছাপ! রাতে কাটোয়ার মন্দিরে বিশেষ পুজো, ভিড় ভক্তদের
প্রতিদিন | ০৫ নভেম্বর ২০২৪
ধীমান রায়, কাটোয়া: কালীমূর্তির বিসর্জনের পর রাস্তায় দেবীর পায়ের ছাপ! যা গিয়েছে পুকুরের ঘাট থেকে মন্দির আগে পর্যন্ত। তা নজরে পড়তেই শোরগোল এলাকায়। ভাসানের পরে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে রাতেই কালীমন্দিরে হল বিশেষ পুজো। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলকোট থানার কোঁয়ারপুর গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, দেবী তাঁদের পুজোয় সন্তুষ্ট হয়েছেন। তাই তিনি এভাবে নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। যদিও বিজ্ঞানমঞ্চের বক্তব্য, এটা গ্রামবাসীদের ভ্রম। কোনও মহিলা স্নান করে উঠেছেন। সেই ছাপ পড়েছে।
অজয়নদ সংলগ্ন মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর গ্রামে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের কালীপুজো শতাব্দী প্রাচীন। এই পুজো শুধুমাত্র চট্টোপাধ্যায় পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আপামর গ্রামবাসী এই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। দেবী পঞ্চমুণ্ডি আপনের উপর প্রতিষ্ঠিত। জানা গিয়েছে, চট্টোপাধ্যায় পরিবারের অধিকাংশ সদস্য কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। পুজোর সময় তাঁরা গ্রামে আসেন। রবিবার চট্টোপাধ্যায় পরিবারের কালীপ্রতিমার বিসর্জন ছিল। শোভাযাত্রা সহকারে দেবীকে নিরঞ্জন করা হয় গ্রামেরই একটি পুকুরে। রাত দশটা নাগাদ বিসর্জন পর্ব মিটে যাওয়ার পর যে যার বাড়ি চলে যান। তার পরই রাস্তায় ছাপ দেখতে পারেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা চন্দন চট্টোপাধ্যায়, বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়রা বলেন, “বিসর্জন শেষে লোকজন পুকুরের ঘাট থেকে অনেক আগেই চলে এসেছেন। রাস্তায় লোকজন নেই। রাস্তা শুকনো। তার পর হঠাৎ রাস্তার উপর পায়ের ছাপ এবং তার পাশে শাড়ির আঁচল থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝড়ে পড়ার ছাপ দেখা যায়। আমরা ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ওইসময় গ্রামের কেউ পুকুরের দিকে যাননি। তাই দুই একজন দেখার পরেই লোকজন জড়ো হয়ে যান।”
স্থানীয় এক দম্পতির দাবি, তখন রাত প্রায় পৌনে এগারোটা। ঘরের জানালা দিয়ে তাঁরা দেখেন একজন বালিকাকে কাপড় গায়ে জলে ভেজা অবস্থায় হেঁটে যেতে। নির্জন রাস্তায় অচেনা মেয়েকে দেখে তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু তার পর ওই মেয়েটিকে দেখা যায়নি।
পায়ের ছাপ দেখার পরেই প্রণাম করার হিড়িক পড়ে যায়। এর পর মন্দিরে রাতেই সংক্ষিপ্ত সময়ের বিশেষ পুজোও হয়। সোমবার পর্যন্ত দেখা যায় আশপাশের গ্রাম থেকেও অনেক লোকজন দেবীর মন্দিরে প্রণাম করতে জড়ো হয়েছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির এক সদস্য জানান, “মাটির দেবী কখনও এভাবে জল থেকে উঠে আসতে পারেন না। আসলে ভ্রম হচ্ছে গ্রামবাসীদের। হয়তো কোনও মহিলা পুকুরে স্নান সেরে উঠেছেন। সেই পায়ের ছাপ পড়েছে রাস্তায়।”