মূলত গত সহস্রাব্দের ৩০ ও ৪০-এর দশকের অভিনেতা ছিলেন অহীন্দ্র চৌধুরী। নামজাদা অভিনেতা। যাকে বলে ডাকসাইটে অভিনেতা। চলচ্চিত্র, নাটক সবেতেই তিনি যা অভিনয় করে গিয়েছেন, তাতে তাঁকে অনায়াসে সর্বকালের সেরা অভিনেতাদের একজন বলা চলে। নাট্যকার মন্মথ রায় তাঁকে নটসূর্য আখ্যায় ভূষিত করেছিলেন।
এহেন প্রতিভাবান অভিনেতার বাড়ি নদীয়ায়। শান্তিপুরের বাগআঁচারা গ্রামে। বর্ধিষ্ণু জমিদার পরিবারের সন্তান ছিলেন অহীন্দ্র। তবে তাঁদের আদি নিবাস ছিল হাঁসখালি যাওয়ার পথে তেঘরিয়া গ্রাম। পরে সেখান থেকে চলে আসেন শান্তিপুরের বাগআঁচারা গ্রামে। এখানে মস্ত দালানকোঠাওয়ালা বাড়ি, চারিদিকে গাছ-গাছালিতে মোড়া। সেই সময়ের অভিজাত পরিবার-- দেখলেই বোঝা যায়।
থিয়েটার-পাগল অহীন্দ্রের বিরল অভিনয় প্রতিভার ছাপ ধরা পড়েছে 'বিল্বমঙ্গল', 'আলিবাবা', 'পঞ্চপাণ্ডব' এবং 'শাজাহান' নাটকে। অসামান্য অভিনয় করবার ফলে অল্প সময়েই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু এমন সৃষ্টিশীল স্মরণীয় মানুষটির গ্রামের বাড়ি আজ যেন পোড়ে বাড়িতে পর্যবসিত! যেন হানাবাড়ি। বাড়িটি রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করা হয়েছিল। সেখানে সকালবেলায় স্কুল চলে। তবে সন্ধে হলেই ঘন আঁধারে ডুবে যায় বাড়ি ও সংলগ্ন চত্বর। সেখান থেকে বিভিন্ন রকমের ভৌতিক আওয়াজ বেরিয়ে আসে। গা ছমছমে একটা পরিবেশ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে বাড়িটি।
গ্রামবাসীরা ৩০ বছর আগে শেষবারের মতো এ বাড়িতে কাউকে দেখেছিলেন। তিনি ছিলেন মহেন্দ্র চৌধুরী। তারপর এখানে কেউ আর সেভাবে কখনও আসেননি বলে দাবি তাঁদের। এবং গ্রামবাসীদের অনেকেরই দাবি, এ বাড়িতে রয়েছে ভূত। এই যে নানা আওয়াজ বেরিয়ে আসে, সেসব ওই ভূতেরই উপদ্রব। গ্রামের মানুষজনের কেউ কেউ ভূতে বিশ্বাস না করলেও তাঁদের অনেকেই অশরীরী আত্মায় বিশ্বাস করেন।