• স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির ইনডোর বন্ধ বছরের পর বছর, বাড়ছে ক্ষোভ
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কাশীপুর: প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। সেখানে চালু থাকার কথা ইনডোর পরিষেবা। ২৪ ঘণ্টাই পরিষেবা পাওয়ার কথা রোগীদের। কিন্তু চালু রয়েছে শুধুমাত্র আউটডোর। ফলে বিকেলের পর থেকেই বন্ধ সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যার জেরে রাতবিরেতে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয় রোগীর পরিবারকে। ভরসা বলতে কাশীপুর ব্লক হাসপাতাল। কাশীপুরের যে সমস্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ি বাঁকুড়ার কাছে, তাঁদের ছুটতে হয় বাঁকুড়া মেডিক্যালে। কেন বছরের পর বছর ধরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়রা। 

    ব্লক স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, কাশীপুর ব্লকের তালাজুড়ি, ক্রোশজুড়ি, কাঁটারাঙ্গুনী ও আগরডিতে মোট চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। যা হোক করে ঠেলা গোঁজা দিয়ে আউটডোর পরিষেবা চালু রাখা হলেও বছরের পর বছর ধরে বন্ধ ইনডোর পরিষেবা। স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তাদের দাবি, কোনও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই পরিকাঠামো নেই। 

    কোনওটার ছাদ দিয়ে জল পড়ে, কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই লেবার রুম, কোনওটাতে আবার রোগী ভর্তি রাখতে গেলে যে সমস্ত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, তা পর্যাপ্ত নেই। ফলে মাঝরাতে কোনও বিপদে পড়লে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয় রোগীদের। বিশেষ করে প্রসূতিদের।

    ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রিয়রদর্শী যশ মানছেন, ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির ইনডোর পরিষেবা বন্ধ আছে। চালু রাখার জন্য যত সংখ্যক চিকিত্সক, নার্স প্রয়োজন তা আছে। কিন্তু মূলত পরিকাঠামোগত সমস্যা থাকায় চালু করা যাচ্ছে না।’ স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু তা পরিকল্পনা মাফিক হয় না। যেমন, ইনডোর পরিষেবা চালু রাখতে সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বসেছে জেনেরেটর। কিন্তু তার কোনও প্রয়োজনই পড়ে না। বছরের পর বছর ধরে তা পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। 

    এদিকে, ব্লকের একমাত্র ৬০ শয্যা বিশিষ্ট কল্লোলী গ্রামীণ হাসপাতালেই নেই জেনেরেটর। সেখানে রাত হলেই অন্ধকারে ঢেকে যায় হাসপাতালে চত্বর। লোডশেডিং হলে দু’টি ইনভার্টার ব্যাটারিই ভরসা। কখন লোডশেডিং হয়ে যায়, তাই জন্ডিস কিংবা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত নবজাতকদের হাসপাতলে রাখার ঝুঁকি নেন না চিকিত্সকরা। কারণ, লোডশেডিং হলে ওয়ার্মার কিংবা ফটোথেরাপির মতো মেশিন চলে না। 

    লোডশেডিং হলে অন্ধকার হয়ে যায় অপারেশন থিয়েটার। যার জেরে ব্যাহত হয় অপারেশন। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে কাশীপুর ব্লকের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিন দিন তলানিতে ঠেকছে বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের। এনিয়ে দ্রুত এনিয়ে পদক্ষেপের দাবিও তুলছেন তাঁরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)