ধান কাটার মরশুমে হাতিশূন্য বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগ,স্বস্তি
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বহুদিন পর ধান কাটার মরশুমে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগ এলাকা হাতিশূন্য হল। সোমবার রাতে আটটি হাতির একটি দল জয়পুরের দিকে চলে গিয়েছে। ফলে এবার হাতির পাল ফসলের ক্ষয়ক্ষতি করবে না বলে আমন চাষিরা আশা করছেন। হাতির দল চলে যাওয়ায় বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের আধিকারিকরাও হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন। শেষ কবে এই পরিস্থিতি ছিল-তা বনদপ্তরের কর্মী-আধিকারিক বা স্থানীয়রা মনে করতে পারছেন না।
বাঁকুড়া উত্তরের ডিএফও দেবাশিস মহিমাপ্রসাদ প্রধান বলেন, আটটি হাতির একটি দল সম্প্রতি এই বিভাগের বড়জোড়া, বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছিল। সোমবার রাতে সেগুলি পাঞ্চেত ডিভিশনের জয়পুরের জঙ্গলে চলে গিয়েছে। এর আগে কয়েকটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি এলাকার জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। তবে তারাও আগেই অন্যত্র চলে গিয়েছে। অন্যবছর এসময় আমাদের বনবিভাগের বিভিন্ন জঙ্গলে অনেক হাতি থাকে। পাকা ধানের লোভে হাতির পাল এসে থাকে। এবারও মাঠে ধান আছে। তাই জেলার সীমানায় থাকা বিভিন্ন হাতির গতিবিধির বিষয়ে আমরা নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছি।
বাঁকুড়ায় বহুদিন ধরেই হাতির আনাগোনা রয়েছে। হাতির দৌরাত্ম্যে বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে। চাষিরা ফসল ফলিয়েও তা গোলায় তুলতে পারেন না। ফসল তোলার আগেই হাতির পাল এসে মাঠের ধান, সব্জি নষ্ট করে দেয়। কখনও ধান ঘরে আনলেও দেওয়াল বা পাঁচিল ভেঙে তা লুট করে নিয়ে যায় হাতি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেসময় হাতি তাড়ানোর জন্য বনদপ্তরের দ্বারস্থ হলেও তাঁদের কথায় কেউ কর্ণপাত করে না। সম্প্রতি এনিয়ে জেলার জনপ্রতিনিধিদের একাংশ বনমন্ত্রীর দ্বারস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু এবার হাতিরা নিজেরাই এই বিভাগের জঙ্গলে ঢোকেনি।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, হাতির পাল খাবারের জন্যই যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়ায়। সাময়িকভাবে হুলাপার্টির সাহায্যে হাতি তাড়ানো সম্ভব। কিন্তু হাতি যদি কোনও এলাকায় যাবে মনে করে, তবে সেখান থেকে তাদের বেশিদিন দূরে রাখা যায় না।
‘রেসিডেন্সিয়াল’ হাতিকে আমরা তাড়িয়ে দিতেও পারি না। সেই চেষ্টা করলে আশপাশের বনবিভাগের আধিকারিকরা আমাদের দোষারোপ করতে থাকেন। তাই এবার হাতিরা এই বিভাগের জঙ্গলে না ঢোকায় আমরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছি।