পদত্যাগ করতে আগ্রহী সমিতির ১২ জন সদস্যকে নিয়ে বৈঠক মহকুমার শাসকের
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বলরামপুরে একসঙ্গে পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করা ১২ জন সমিতির সদস্যকে ডেকে বৈঠক করলেন পুরুলিয়ার মহকুমা শাসক। এদিনের বৈঠকে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, সদস্যদের ছাড়াও বলরামপুরের বিডিওকেও ডাকা হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ওই বৈঠক হয়। যদিও বৈঠকে সমস্যা মিটে গিয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির ওই সদস্যরা।
প্রসঙ্গত বেশ কিছুদিন ধরে বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে শাসক দলের সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সহ ১২ জন সদস্য মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে পদত্যাগ পত্র দিয়েছিলেন। মহকুমা শাসক সমিতির সদস্যদের ডেকে পদত্যাগ করার পদ্ধতিগত যে ত্রুটি রয়েছে, সেকথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন। যদিও তারপর ত্রুটি সংশোধন করে আর কেউ পদত্যাগ পত্র জমা দেননি। পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করা সদস্যদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে মিলে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন। সমিতির সব সদস্যকে বহু বিষয় জানানো পর্যন্ত হচ্ছে না। গোটা বিষয়টি নিয়ে বলরামপুর ব্লক তৃণমূলের অন্দরেও হইচই পড়ে যায়। কালীপুজো মিটতেই মঙ্গলবার নিজের অফিসে সমিতির ওই ১২ জন সদস্যকে ডেকে পাঠান পুরুলিয়ার মহকুমা শাসক উৎপলকুমার ঘোষ। এদিন দুপুর বারোটার সময় বৈঠক শুরু হয়।
এ বিষয়ে বলরামপুরের বিডিওকে জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি কিছু বলতে চাননি। বৈঠক হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মহকুমা শাসক। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে মহকুমা শাসক বলরামপুরের বিডিওকে বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে শুধুমাত্র নিয়মমাফিক স্থায়ী সমিতির ন্যূনতম বৈঠক করার পরিবর্তে প্রতিমাসে স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডাকার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমা শাসক। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং আধিকারিকদের যৌথভাবে সমস্ত বিষয়ের পরিচালনা করার জন্য একটি টিম তৈরির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সমিতির সভাপতি সঙ্গে অন্যান্য সদস্যদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তার জন্যই সমস্যা বড় আকার ধারণ করেছে। বলা হয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনার ক্ষেত্রে সদস্যদের মধ্যে যেন কোনও দূরত্ব তৈরি না হয়। এছাড়া কোনও সদস্য যেন বলতে না পারেন যে, তিনি কাজের বিষয়ে কিছু জানেন না।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও জেলাশাসকের অফিস চত্বরে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্য তথা বলরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গৌতম মাহাত। তিনি বলেন, বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় ভেতরে কী কথা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানি না। তবে সমিতির সব সদস্যকে একসঙ্গে চলার বার্তা দল থেকেও দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পরস্পরের মধ্যে যাতে দূরত্ব সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সকলকে আরও সচেষ্ট হতে হবে। দলের মধ্যে এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্লক সভাপতি।