সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিতের ভূমিকা কী, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে জানাবে সিবিআই
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল কীভাবে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করেছেন, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে তা বিস্তারিত উল্লেখ করতে চলেছে সিবিআই। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য কীভাবে বিভিন্ন লোককে প্ররোচনা দিয়েছেন, সেই বিষয়টিও চার্জশিটে থাকার কথা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শিয়ালদহ আদালতে প্রথম সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট জমা পড়বে বলে জানা যাচ্ছে।
টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল ও সন্দীপ ঘোষকে ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। নিয়মানুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে প্রথম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা করতে হয়। চলতি মাসের ১৩ তারিখ সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে চার্জশিট জমা না পড়লে বেকায়দায় পড়তে হবে তদন্তকারী কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তা আদালতে জমা পড়বে বলে এজেন্সি সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে চার্জশিট তৈরি হয়ে গিয়েছে। আইনজীবীরা বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখছেন এখন। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলেই আদালতে চার্জশিট জমা দেবে তদন্তকারী সংস্থা।
সিবিআই সূত্রে খবর, অভয়ার দেহ উদ্ধারের খবর পাওয়ার পর প্রাক্তন অধ্যক্ষ যে যথাযথভাবে তাঁর ভূমিকা পালন করেননি, সেই বিষয়টি উল্লেখ থাকছে চার্জশিটে। ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা, সেই কারণে আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করা, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে ঘনিষ্ঠদের ডেকে পাঠিয়ে সেমিনার হলে পাঠানো ইত্যাদি বিষয়গুলিও থাকছে। সেমিনার হলে অনেক লোকজন পাঠানোর কারণ যে আদতে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের চেষ্টা, তার প্রমাণ হিসেবে ফোন কল ডিটেইলসের উল্লেখ থাকছে। তাছাড়া, ঘটনা নিয়ে দ্রুত লিখিত অভিযোগ না করায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটে সুবিধা হয়েছে বলেও চার্জশিটে জানাতে চলেছে সিবিআই। সেই সঙ্গে সন্দীপ ঘোষ কয়েকজনকে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের জন্য যে প্ররোচনা দিয়েছেন, তার প্রমাণ হিসেবে ডিজিটাল নথির ফরেন্সিক রিপোর্ট জমা দেবে তদন্তকারী সংস্থা। এমনকী, নারকো টেস্টে রাজি না হয়ে তিনি কীভাবে তদন্তকারীদের সঙ্গে অসহযোগিতা করেছেন, তাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হচ্ছে বলে খবর। টালা থানার তৎকালীন ওসি ফোনে ঘটনা জানলেও সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করেননি। তথ্যপ্রমাণ নষ্টের জন্যই এই ইচ্ছাকৃত বিলম্ব বলে দাবি করতে চলেছে সিবিআই। এছাড়া, তথ্যপ্রমাণ লোপাট নিয়ে সন্দীপ ও অভিজিতের মধ্যে যে কথা হয়েছিল, তার প্রমাণও চার্জশিটে তুলে ধরা হবে বলে জানা গিয়েছে।