• নতুন ৪ জেলায় মডিউল তৈরির চেষ্টা করছে জেএমবি, রাজ্যকে সতর্ক করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী সরকার গড়া মাত্রই এপার বাংলার ঝিমিয়ে পড়া সংগঠনকে চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জেএমবি (নিও)। চারটি জেলায় নতুন করে মডিউল গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি তাদের প্রথম বৈদেশিক শাখা খোলা হয়েছিল যে জেলায়, সেই মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্লিপার ও লজিস্টিক সেলগুলিকে পুনরায় কার্যকর করাটাই এখন লক্ষ্য এই জঙ্গি সংগঠনের। বাংলায় জেএমবি’র (নিও) তৎপরতা বাড়াতে এবার সরাসরি আসরে নেমেছে পাকগুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে নবান্নের কাছে। বাংলাদেশের কারা সীমান্তের ওপারে বসে  এখানে সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা করছে তার তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে বলে খবর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে জঙ্গি দমনে যুক্ত এ রাজ্যের আধিকারিকদেরও বৈঠক হয়েছে বলে খবর।

    ২০১৪ অক্টোবরে খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের পরই রাজ্যে জেএমবি মডিউলের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য হাতে আসে গোয়েন্দাদের।  মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে জেএমবির একাধিক স্লিপার সেলের অস্তিত্ব মেলে। রাজ্য পুলিস ও এনআইএর একের পর অভিযানে জেএমবি’র মাথাসহ একাধিক সদস্য গ্রেপ্তার হয়। এই জঙ্গি সংগঠনের কোমর ভেঙে  যায়। স্লিপার সেলের একাধিক সদস্য রাজ্য ছেড়ে পালায়। তাদের একটা বড় অংশ বেঙ্গালুরুতে ধরা পড়ে।

    শেখ হাসিনা উৎখাতের পর বাংলাদেশ এখন ‘ভারত বিরোধীদের’ চারণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। জেএমবি (নিও) এবং আল-কায়দার (বেঙ্গলি ইউনিট) সহ সমস্ত উগ্র ও মৌলবাদী সংগঠন এক ছাতার তলায় এসেছে। এ রাজ্যে একসময়ে জেএমবির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বাংলাদেশের মেন্টররা। এপারেও এসেছে তাদের কয়েকজন। কীভাবে নতুন মডিউলকে প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে তার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।  গোয়েন্দাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জেএমবির শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়। সেখানে লস্কর ই তৌহিদ, মায়ানমারের রোহিঙ্গা জঙ্গিদের প্রতিনিধি এবং আইএসআই’এর দু’জন কর্তা হাজির ছিল। সেই বৈঠক থেকেই ঠিক হয়, মালদহ, মুর্শিদাবাষদ ও উত্তর দিনাজপুরের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের আরও চার জেলায় সংগঠনর বিস্তার ঘটাতে হবে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জেএমবির বিভিন্ন নেতার ফোনে আঁড়ি পেতে জানতে পারছেন, এবার তাদের টার্গেট দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া ও বীরভূম। সংগঠন বিস্তারের জন্য এই সমস্ত জায়গায় বিপুল পরিমাণ নগদ ছড়াচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আসা জেএমবির সদস্যরা। এই টাকার পুরোটাই জোগাচ্ছে আইএসআই। সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আইএসআইয়ের এক শীর্ষ কর্তা বাংলাদেশে এসে জেএমবি (নিউ)র বড় মাথাদের কাছে বৈঠক করে গিয়েছেন বলে গোয়েন্দারা জেনেছেন। সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন জেলায় বাংলাদেশের জঙ্গি নেতারা নতুন মডিউল মেম্বারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।  ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তারা একজায়গায় ‘ল্যাবরেটরি’ ও বিস্ফোরক তৈরির কাঁচামাল রাখছে না। দুটির জন্য আলাদা আলাদা জায়গা বাছা হয়েছে বলে খবর। এইসব বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য আসার পরেই জেএমবির  নজরে থাকা জেলাগুলিতে সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে নজরদারি শুরু করেছেন কেন্দ্র ও রা঩জ্যের গোয়েন্দারা। 
  • Link to this news (বর্তমান)