• ব্যবসায়ী কিংবা পেশাদার হলেও আয় ‘শূন্য’!  বিজেপি ও বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থীর ঘোষণায় বিস্ময়
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
  • রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: পেশাগতভাবে একজন মধু সংগ্রাহক এবং ব্যবসায়ী।অন্যজন পেশাদার আইনজীবী। তাঁদের হাতে নগদ টাকা আছে। অর্থ গচ্ছিত রয়েছে ব্যাঙ্কেও। আর আছে বেশকিছু সম্পত্তি। কিন্তু এতসবের পরেও তাঁদের আয় ‘শূন্য’। এমনই তথ্য উঠে এল নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া দুই প্রার্থীর হলফনামায়। এই তথ্য সামনে আসার পর রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, প্রত্যেক প্রার্থীর সমস্ত তথ্যই জানানো উচিত। কিন্তু ওই দুই প্রার্থী এমন কাজ কেন করলেন, সেই প্রশ্নটাই তুলে দিয়েছে বিরোধী পক্ষ।

    ১৩ নভেম্বর রাজ্যে ছয়টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন। তার মধ্যে একটি উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই ভোটের জন্য যতসংখ্যক মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে সামনে এসেছে হাড়োয়া কেন্দ্রের দুই প্রার্থীর হলফনামায় উল্লেখিত বেশকিছু তথ্য।

    হাড়োয়ায় বিজেপির প্রার্থী বিমল দাস। নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা তিনি জমা দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিমল এবং তাঁর স্ত্রী শ্যামলী দাসের প্যান কার্ড রয়েছে। কিন্তু শেষ পাঁচটি অর্থবর্ষে বিমলের কোনও আয় নেই! হলফনামায় ইনকাম ‘নিল’ (অর্থাৎ শূন্য) লিখেছেন বিমল।আরও তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, হলফনামার বয়ান অনুসারে এই মুহূর্তে বিমলের হাতে আছে নগদ ১০ হাজার টাকা। এছাড়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে রয়েছে ৪৫,৫০০ টাকা। তাঁর আছে ৭০ হাজার টাকা দামের সোনার আংটি। কৃষিজমি এবং অন্যান্য সম্পত্তির কথাও উল্লেখ করেছেন বিমল। 

    কিন্তু এতকিছুর পরেও তাঁর আয় ‘শূন্য’ কীভাবে? এই বিষয়ে বিমলবাবুর বক্তব্য, মধু সংগ্রহসহ ব্যবসা রয়েছে আমার। বছরে কয়েক লক্ষ টাকা উপার্জন হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা আমি নিজে হাতে লিখিনি। ওটা পার্টির জেলা নেতৃত্বের তরফে করা হয়েছে।

    এই কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম। তাঁকে সমর্থন দিয়েছে বামফ্রন্ট। নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হলফনামায় পিয়ারুল জানান যে তাঁর প্যান কার্ড আছে। কিন্তু তাঁর স্ত্রীর প্যান কার্ড নেই। তাঁর হাতে এই মুহূর্তে নগদ রয়েছে ১২,৫০০ টাকা। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ২০৫ টাকা। তাঁর স্ত্রীর কাছেও রয়েছে নগদ অর্থ এবং ব্যাঙ্কে সঞ্চয়। তাঁর জমিজমাসহ অন্যকিছু সম্পত্তিরও উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়।কিন্তু এতকিছুর পরও ‘কোনও ইনকাম নেই’পিয়ারুলের, এই তথ্যই জমা দিয়েছেন তিনি নির্বাচন কমিশনে। পিয়ারুলের বক্তব্য, প্রতিমাসে আমারনির্দিষ্ট তেমন কোনও আয় নেই। তাই মনোনয়নপত্রে আয়ের উল্লেখ করিনি। 

    যাঁর যেটুকু আয়, হলফানামায় সেটুকুও উল্লেখ করা উচিত বলে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।এই প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, যেকোনও ভোটপ্রার্থীরই উচিত সমস্ত তথ্য অকপটে জানানো। আমার আয়ের তথ্য আমি জমা দিয়েছি। বাকি প্রার্থীরা যদি তা না দিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁরা অনুচিত কাজই করেছেন। সবদিকটাই দেখা উচিত নির্বাচন কমিশনের।
  • Link to this news (বর্তমান)