নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: অশান্তির আগাম আশঙ্কা ছিলই। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম স্বয়ং হস্তক্ষেপ করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও মঙ্গলবার বিধাননগর পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে ‘অশান্তি’ এড়ানো গেল না। আগের বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে কেন আলোচ্য বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তকে রীতিমতো চেপে ধরা হয়েছিল। টেবিল চাপড়ে অনেকে সেই ‘চেপে ধরা’কে সমর্থনও করেন। কিন্তু, সমাধানের আগেই মাঝপথে বৈঠক বন্ধ করে বেরিয়ে যান চেয়ারম্যান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়েছে। অনেকে বলছেন, পুরসভার অন্দরে শাসক দলের দু’টি লবি রয়েছে। সেই লবির বিবাদ থেকেই এই ঘটনা।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিধাননগরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। মন্ত্রী সুজিত বসুর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বারাসত লোকসভায় তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতলেও বিধাননগর বিধানসভায় লিড পায় বিজেপি। তা নিয়ে পুরসভা ও মেয়রের সমালোচনা করেছিলেন চেয়ারম্যান। সল্টলেক শহরে জবরদখল নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তখন সব্যসাচীবাবুও পুরসভার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বোর্ড মিটিংয়ে পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রসেনজিৎ নাগ চেয়ারম্যানের কী ক্ষমতা, কী কী কাজ করতে পারেন, কী কী পারেন না, তা তুলে ধরেন। চেয়ারম্যান মন্ত্রগুপ্তির শপথ ভেঙে আইনবিরুদ্ধ কাজ করছেন বলেও সেখানে দাবি করেন প্রসেনজিৎবাবু। তাঁর সেই বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ হয়েছিল। সেখানে স্বাক্ষরও করেছিলেন সব্যসাচীবাবু। তা নিয়ে দলের অন্দরে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে পুরমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। এদিনের বৈঠকে যাতে বিতর্ক না হয়, সেই বার্তাও দিয়েছিলেন ফিরহাদ। সূত্রের খবর, এদিন বৈঠক শুরু হতেই প্রসেনজিৎবাবু কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া ওই প্রসঙ্গ তোলেন। সব্যসাচীবাবুর থেকে তিনি জবাবও চান। তখন টেবিল চাপড়ে প্রসেনজিৎবাবুকে অনেক কাউন্সিলার সমর্থন করেন। শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই বৈঠক মুলতুবি করে বেরিয়ে যান সব্যসাচীবাবু। এ ব্যাপারে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’ প্রসেনজিৎবাবুকে ফোন করা হলেও তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।