মশাগ্রাম-বাঁকুড়া রেলপথ সংযুক্তিকরণ, বর্ধমান-হাওড়া লোকাল সহ বহু এক্সপ্রেস বাতিল
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বহু বছর অপেক্ষার পর সরাসরি হাওড়া থেকে মশাগ্রাম হয়ে বাঁকুড়ার ট্রেন চলাচল শুরু হতে চলেছে। সিগন্যাল আপগ্রেডেশনের কাজ করার জন্য রেল ১৪-১৭ নভেম্বর বেশকিছু এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন বাতিল করেছে। কিছু দূরপাল্লার ট্রেন ঘুরপথে চালানো হবে। নিত্যযাত্রীদের দাবি, ছুটির দিনগুলিতে রেল এই কাজ করতে পারত। সেটা হলে যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হতো না। তা না করে ছুটি কাটার পরই রেল এই কাজ শুরু করছে। এতে ব্যাপক ভোগান্তি হবে।
রেল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ১৪-১৭নভেম্বর চারদিন হাওড়া-বোলপুর শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, হাওড়া-রামপুরহাট শহিদ সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শিয়ালদহ-রামপুরহাট মা তারা এক্সপ্রেস, হাওড়া-সিউড়ি হুল এক্সপ্রেস, শিয়ালদহ-সিউড়ি মেমু বাতিল থাকবে। কবিগুরু এক্সপ্রেস ১৩ নভেম্বর থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত চলবে না। শিয়ালদহ-আসানসোল ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ১৪-১৬ এবং গণদেবতা এক্সপ্রেস ১৬ ও ১৭ নভেম্বর চলবে না। হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস, সরাইঘাট, পদাতিক, শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস এবং মুম্বই মেল ঘুরপথে চালানো হবে।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৪ এবং ১৫ তারিখ কর্ড লাইনে ১১টি আপ এবং ডাউন লাইনে ১২টি লোকাল ট্রেন বাতিল থাকছে। ওই দু’দিন মেন লাইনে আপেও ১১টি লোকাল ট্রেন চলবে না। ডাউন লাইনে ১০টি লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে। এছাড়া আরও বেশকিছু ইএমইউ ট্রেন আপ এবং ডাউনে বাতিল থাকবে। রেলের দাবি, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং সিস্টেমে মশাগ্রাম হয়ে ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের মাধ্যমে ট্রেন চলবে। হাওড়া থেকে বাঁকুড়া যাওয়া আরও সহজ হবে। খুব কম সময়ের মধ্যেই সেই জেলায় পৌঁছনো যাবে। পর্যটনের ক্ষেত্রে বাঁকুড়া জেলা অনেক এগিয়ে যাবে। কলকাতা থেকে অনেকেই বাঁকুড়া বেড়াতে যান। এতদিন তাঁদের ঘুরপথে যেতে হতো। এখন সরাসরি তাঁরা বাঁকুড়া যেতে পারবেন। বাঁকুড়ার বাসিন্দারাও এই রেলপথের জন্য বহুদিন ধরেই অপেক্ষা করছিলেন। প্রতীক্ষার অবসান হতে চলায় তাঁরাও খুশি।
রেল আরও জানিয়েছে, মশাগ্রাম এবং শক্তিগড় স্টেশনে নন ইন্টারলকিংয়ের কাজও হবে। সেই কারণে বেশকিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। নিত্যযাত্রী দেবাশিস দাস বলেন, রেলের এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয়। কিন্তু তারা পুজোর ছুটির সময় এই কাজ করতে পারত। তখন বেশিরভাগ অফিস বন্ধ ছিল। অফিস খোলার পরই ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে। ওই সময় হাওড়া পৌঁছনো দায় হয়ে উঠবে। আর এক রেলযাত্রী পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, এতগুলি ট্রেন বাতিল হওয়ায় সমস্ত যাত্রীই নাকাল হবেন। অন্য সময় এই কাজ করা যেত। যাত্রীদের বাসের উপর নির্ভর করতে হবে। বর্ধমান শহরের যাত্রীরা বাসে করে সহজে পৌঁছতে পারবেন। কিন্তু যাঁরা অন্য জায়গা থেকে হাওড়া যাবেন তাঁদের সমস্যা বাড়বে। তবে হাওড়া থেকে বাঁকুড়া যাওয়ার সরাসরি রেলপথ চালু হলে বহু যাত্রী উপকৃত হবেন।