ট্রেডিং অ্যাপে লগ্নি করে মোটা মুনাফার টোপ, খাতড়ার স্কুলশিক্ষক খোয়ালেন ১৬ লক্ষ
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: ট্রেডিং অ্যাপের ফাঁদে ১৬ লক্ষ টাকা খোয়ালেন খাতড়া থানা এলাকার এক স্কুল শিক্ষক। সোশ্যাল মিডিয়ার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে কম সময়ে মোটা টাকা মুনাফার আশায় ধাপে ধাপে ১৬ লক্ষ টাকা লগ্নি করে তিনি ফেঁসে গিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একই ট্রেডিং অ্যাপে লগ্নি করে খাতড়া থানা এলাকার একাধিক ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকা খুইয়েছেন। অনেকেই পুলিসের কাছে অভিযোগ জানাননি। ওই শিক্ষক বাঁকুড়া সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানাতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকরা কম সময়ে মোটা টাকা মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তাতে অনেকেই আকৃষ্ট হচ্ছেন। নির্দিষ্ট লিঙ্কে গিয়ে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। এনিয়ে পুলিসের তরফে বারবার সচেতন করা হচ্ছে। তারপরেও অনেকে লোভে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, খাতড়া থানা এলাকার প্রাইমারি স্কুলের এক শিক্ষক কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিজ্ঞাপন দেখে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হন। এক ব্যক্তি ও এক মহিলা নিজেদের ওই গ্রুপের ইনস্ট্রাকটর এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্ট্রাকটর হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের সংস্থার মাধ্যমে অর্থ লগ্নি করলে ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করা যাবে বলে আশ্বাস দেয়। সেই মতো তারা মেলে একটি লিঙ্ক দেয়। তাদের পরামর্শ মতো ওই লিঙ্কের মাধ্যমে একটি প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্ট খোলেন। শিক্ষক প্রথমে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। পরের দিন তাদের অনলাইনে আরও এক লক্ষ টাকা দেন। তারপরের দিন ৪০হাজার টাকা বিনিয়োগ করার পর নির্দিষ্ট অ্যাপে কয়েকগুণ মুনাফা হয়েছে বলে দেখানো হয়। এরপর টাকা তোলা যাচ্ছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য অ্যাপের মাধ্যমেই ৫০০টাকা তোলেন। তাতেই বিশ্বাস জন্মে। সন্দেহ দূর হতেই কোনও কিছু না ভেবেই তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে নিজের এবং মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে সমস্ত টাকা তুলে ধাপে ধাপে মোট ১৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা লগ্নি করে দেন। তাতে কয়েকগুণ মুনাফা হয়েছে বলে অ্যাপে দেখানো হয়। এরপরেই প্রতারকদের আসল খেলা শুরু হয়। টাকা তোলার কথা বলতেই জানানো হয় যে আরও এক কোটি টাকা লগ্নি করলে তবেই তিনি টাকা তুলতে পারবেন। একথা শুনেই মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয়। এত টাকা জোগাড় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি মুনাফা বাদ দিয়ে তাঁর আসল টাকা ফেরত চান। কিন্তু, ওই প্রান্ত থেকে একটাই উত্তর, আগে এক কোটি টাকা লগ্নি করুন। এরপর তিনি প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান। প্রতারিত ওই শিক্ষক বলেন, এলাকার অনেকেই ওই ট্রেডিং অ্যাপে লগ্নি করেছে। তাদের দেখে আমিও লগ্নি করে প্রতারিত হয়ে গেলাম। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।