সংবাদদাতা, কান্দি: পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। অনেকে নতুন জামাকাপড়ও কেনাকাটা শেষ করেছেন। বাড়িতে তৈরি হচ্ছে নারকেল নাড়ু। গ্রামে বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে বড় বড় তোরণ। কারণ সালারের কাগ্রামে দুর্গাপুজো নয়, জগদ্ধাত্রী পুজোই বছরের সেরা উৎসব। যা নিয়ে গ্রামের মানুষ উন্মাদনায় ভাসছেন।
গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন। তবে কৃষ্ণনগর থেকে যে গ্রামের পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছিল তা সকলেই এককথায় মেনে নেন। প্রথমদিকে গ্রামে পারিবারিক পুজো হলেও এখন পারিবারিকের সঙ্গে সর্বজনীন মিলিয়ে প্রায় ২৮টি পুজো হচ্ছে। দুর্গাপুজোর মতো জগদ্ধাত্রী পুজোতে যেমন নতুন কাপড় কেনার হিড়িক পড়ে। তেমনই নারকেল নাড়ু থেকে অন্যান্য সামগ্রীও তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা মিতালি রায় বলেন, জগদ্ধাত্রী পুজোই আমাদের গ্রামের সেরা উৎসব। এই সময়ে আত্মীয়স্বজন থেকে অতিথিরা বাড়িতে আসেন। দুর্গাপুজোর মতো করেই সবকিছু করা হয়।
গ্রামে মোট ২২টি পাড়া রয়েছে। এরমধ্যে তিনটি পাড়া এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারের বসবাস বেশি। গ্রামের হাজারের বেশি যুবক, প্রৌঢ় কাজের সূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। তাঁদের অধিকাংশ জগদ্ধাত্রী পুজোয় বড়ি ফেরেন। গ্রামের প্রৌঢ় স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, দুর্গাপুজোয় বাড়ি ফিরিনি। কারণ জগদ্ধাত্রী পুজোয় বাড়ি আসতেই হতো। শনিবারের মধ্যে অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক গ্রামে ফিরবেন।
ওই পুজো চারদিনের বদলে একদিনে শেষ হয়। পরের দিন দেবীর বিসর্জন হয়। তাই আগামী রবিবার পুজোর আনন্দে মেতে উঠবে বাসিন্দারা। এখন গ্রামজুড়ে চলছে পুজোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি। গ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে বড় বড় তোরণ। পুজোর একদিন আগেই সেগুলি আলোকসজ্জায় ভরে উঠবে। প্রতিটি পুজো মণ্ডপের সামনেও বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। কোথাও আবার মণ্ডপের সঙ্গে অতিরিক্ত মঞ্চও তৈরি করা হচ্ছে। কারণ পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইতিমধ্যে পুলিস ও প্রশাসনের লোকজন শান্তি বজায় রাখতে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে কয়েকবার আলোচনায় বসেছে। কারণ হাজার হাজার দর্শনার্থীকে সামাল দেওয়া পুলিসের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। গ্রামের মাঝামাঝি জায়গায় পুলিস ক্যাম্প করা হচ্ছে। পুজোর দিন কান্দির এসডিপিও শাশ্রেক আম্বারদার সহ একজন অতিরিক্ত পুলিস সুপারের আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সালার থানার পুলিস জানিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নবকুমার সাহা বলেন, পুজোর উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে। মেলায় স্টল খোলার জন্য ব্যবসায়ীরা দোকান পাততে শুরু করেছেন। গ্রামের বাইরে খোলা হচ্ছে পার্কিং ব্যবস্থা। কারণ পুজোর দিনে বাইক নিয়েও গ্রামে ঢোকা যাবে না।