পুরাতন মালদহে উত্সবের মরশুমে দেদার বিক্রি, রসকদম্বকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
মঙ্গল ঘোষ, পুরাতন মালদহ: নাম শুনলেই জিভে জল। ছোট আকারের রসগোল্লা। সেটা ঢাকা ক্ষীরের আস্তরণে। তার উপরে পোস্তর প্রলেপ। এমন সুস্বাদু রসকদম্ব মিষ্টি রসনা তৃপ্তি করে জেলাবাসীর। সারাবছর বিভিন্ন উত্সবের পাশাপাশি এমনিও এই মিষ্টি দেদার কেনাবেচা হয়। ভাইফোঁটায় এই মিষ্টি কিনতে পুরাতন মালদহ শহরে কার্যত হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। জেলার পরিচিতি রূপে পরিগণিত হওয়া রসকদম্বকে জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) স্বীকৃতি দেবার দাবি উঠেছে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্রেতারাও এই বিষয়ে একমত।
রসকদম্ব দেখতে অনেকটা কদম ফুলের মত। শুকনো মিষ্টি, রস নেই। অনেক দিন রেখে খাওয়া যায়। দাম খুব সাধ্যের মধ্যে। ছোট পিস ১০ টাকা। আরও একটু বড় সাইজের নিতে হলে ক্রেতাদের ১৫থেকে ২০ টাকা খরচ করতে হবে। ক্ষীর,মিষ্টি দিয়ে তৈরি হয় রসকদম্ব। বছর ভর জেলায় রসকদম্বর ব্যাপক চাহিদা। বিভিন্ন সময় অর্ডার মিললে দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদেও এই মিষ্টি পাঠানো হয়। এছাড়াও রাজ্যের কেউ মালদহে এলেই রসকদম্ব নিয়ে যায় বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। পুরাতন মালদহের মিষ্টি ব্যবসায়ী নিখিল হালদার বলেন, উৎসবের দিনগুলিতে রসকদম্ব ভালো বিক্রি হয়েছে। কোনও অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেকে এই মিষ্টি কেনেন। পুজোয় পাঁচ রকমের মিষ্টি কিনলে একটা রসকদম্ব তালিকায় থাকবেই। জিআই স্বীকৃতি পেলে ভালো হয়। ক্রেতাদের মধ্যে রসকদম্ব নিয়ে যেন উত্সাহ আলাদাই। মঙ্গলবাড়ির বাসিন্দা মানস ঘোষ বলেন, রসকদম্ব জেলার প্রাচীন মিষ্টি। মহাপ্রভু যখন গৌড়ে এসেছিলেন, সেই আমলে এই মিষ্টি ছিল। রসকদম্ব জিআই স্বীকৃতি পেলে জেলার নাম উজ্বল হবে। মালদহ বণিক সভার সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, মিষ্টি কতটা বিক্রি হয়েছে, সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে এই মিষ্টির চাহিদা প্রচুর। সব মিষ্টি ভালো বিক্রি হয়েছে। রসকদম্ব মিষ্টি জিআই স্বীকৃতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেছিলাম। আগামী দিনে প্রশাসনিক বৈঠক হলে আমরা আবারও মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব। পুরাতন মালদহ পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ বলেন, রসকদম্ব মিষ্টি একমাত্র আমাদের মালদহে পাওয়া যায়। বাইরের জেলায় গেলে পাওয়া যায় না। সেজন্য অনেকেই বাইরে আত্মীয় বাড়ি গেলে রসকদম্ব নিয়ে যায়। আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে জিআই স্বীকৃতি জন্য খাদ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানাব।