উদ্বোধনের দেড় বছর পার, জোত নিজ্জামায় চালু হয়নি স্বাস্থ্যকেন্দ্র
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: সাবেক ছিটমহলবাসীদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য এলাকায় তৈরি করা হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল যার ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দেড় বছর কেটে গেলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হয়নি। ফলে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ফেলে রাখায় সাবেক ছিটমহল জোত নিজ্জামার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা কাশীকান্ত বর্মন বলেন, ব্যবহার না করায় নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ক্রমশ বেহাল হয়ে পড়ছে। রাতে সেখানে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে।
জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গীতা বর্মন বলেন, কী কারণে সেটি চালু হচ্ছে না, সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই। কোচবিহার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারীও বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
সাবেক ছিট জোত নিজ্জামার বাসিন্দা গোপাল রায়, দীনবন্ধু রায়, প্রফুল্ল বর্মন প্রমুখ জানিয়েছেন, এখান থেকে সবচেয়ে কাছে জামালদহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। সেক্ষেত্রে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হলে আমরা দুয়ারে চিকিৎসা পরিষেবা পাব।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের জোত নিজ্জামা সহ মোট ১১টি বাংলাদেশি ছিটমহল ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সেই সময় ওইসব আবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। তার মধ্যে ছিল রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বৈদ্যুতিক পরিষেবা, কৃষি সেচ ও এলাকায় চিকিৎসালয় নির্মাণ। সাবেক ছিটমহলবাসীদের অভিযোগ, তাঁদের নাগরিকত্ব মিললেও বহু প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মিত হলেও তা চালু হয়নি। সম্পূর্ণ এলাকা কৃষি নির্ভর হলেও, জলসেচের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। কিছু রাস্তাঘাট পাকা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যোগাযোগের মূল সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। - নিজস্ব চিত্র।