ফেসবুকে পরিচয়, কালীপুজোয় বেহুঁশ করে তরুণীকে গণধর্ষণ
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফেসবুকে পরিচয়। ক্রমে গভীর হয় সম্পর্ক। সেই বন্ধুরই লালসার শিকার হলেন তরুণী। কালীপুজোর রাতে ঠান্ডা পানীয়ে মাদক মিশিয়ে বেহুঁশ করে গণধর্ষণ করা হল তাঁকে। ঘটনাস্থল নরেন্দ্রপুর থানার গড়িয়ার ঢালুয়া। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। নাম রাজীব সর্দার ওরফে বাবুসোনা এবং রাকেশ নস্কর। পুলিসকে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে আরও এক যুবক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, তাঁর নাম রাকেশ হালদার। আপাতত সেই যুবক পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, ওই তরুণী বিবাহিত। একটি সন্তানও রয়েছে। কয়েক মাস আগে ফেসবুকে রাজীবের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তরুণীর। কিছুদিনের মধ্যেই ঘনিষ্ঠ হয় সেই সম্পর্ক। সেই সূত্রে কালীপুজোর রাতে বান্ধবীকে গড়িয়ায় ঠাকুর দেখতে আসার আহ্বান জানান রাজীব। সেই মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব যাদবপুর থেকে গড়িয়া স্টেশনে আসেন ওই তরুণী। এরপর আড্ডা মারার জন্য গড়িয়ার ঢালুয়ায় রাকেশ হালদার নামে রাজীবের এক বন্ধুর বাড়িতে আসেন দু’জনে। সেখানে রাকেশ নস্করও উপস্থিত ছিলেন। রাতে চারজনে মিলে খাওয়া দাওয়া এবং মদ্যপান করেন। অভিযোগ, সেই সময় ওই তরুণীর পানীয়ে মাদক মিশিয়ে দেওয়া হয়। বেহুঁশ হয়ে পড়লে গণধর্ষণ করা হয় তাঁকে। পরদিন সকালে উঠে যখন নির্যাতনের বিষয়টি বুঝতে পারেন তরুণী, এক বন্ধুকে ডেকে পাঠান। তাঁর স্কুটারে কোনওক্রমে বাড়ি ফেরেন নির্যাতিতা। অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয় তাঁর। সুস্থ হয়ে ওঠার পর ৩ নভেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতী। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার পরই ঝিমুনি ভাব শুরু হয়। আবছা আবছা দেখতে পাচ্ছিলাম। বেহুঁশ হয়ে পড়ি। রাজীব এবং রাকেশ মিলেই আমায় ধর্ষণ করেছে। তৃতীয়জন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তিনি কিছু করেননি।’ ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস সোমবার রাতে গড়িয়া থেকে ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে। আরও একজনের খোঁজ চলছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। থানা থেকে বের করার সময় দুই ধৃত একেবারে চুপচাপ ছিলেন। পরে তাঁরা জানান, এমন কিছু করেনি। তাহলে কি ফাঁসানো হয়েছে? সে ব্যাপারেও নিরুত্তর ছিলেন দু’জনেই। কারও নির্দেশে নাকি পরিকল্পনা করেই এই পাশবিক ঘটনা ঘটানো হয়েছে, ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে পেয়ে সেই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তৃতীয় ব্যক্তির ভূমিকা কী ছিল, সেটাও জানার চেষ্টা চলছে।