আগামীকাল, বৃহস্পতিবার ছটপুজো। ইতিমধ্যেই এই পুজো উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মানুষজন। তবে উৎসবের মরশুম এখন শেষ পর্বে এসে পৌঁছেছে। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা, দীপাবলি সব মিটে গিয়েছে। কিন্তু টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পরও সবজির দাম ছিল আকাশছোঁয়া হয়ে রয়েছে। রাত পোহালেই ছটপুজো। আর তার প্রাক্কালে বুধবার সকালেও বাজারে জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া দেখা গেল। বাজারে গেলে হাতে ছ্যাঁকা লাগছে দামের জেরে। অধিকাংশ সবজিরই দাম অত্যন্ত বেশি। হিন্দিভাষীদের বিশেষ ধর্মীয় উৎসব ছটপুজো হলেও সারা বাংলার মানুষের মধ্যেও মিশে গিয়েছে ছটপুজো।
ছট কথাটির আক্ষরিক অর্থ সূর্য। বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও নেপালের বড় অংশের মানুষের এক বিশেষ ধর্মীয় উৎসব ছটপুজো। কিন্তু বাংলায় ওই ধর্মাবলম্বীর মানুষ থাকায় সেটা বিশেষ আড়ম্বর পেয়ে থাকে। বহু বাঙালি এই ছটপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থেকে আনন্দ উপভোগ করেন। তবে এই ছটপুজোকে সামনে রেখে আগুন হয়েছে সবজির বাজার দর। চন্দ্রমুখী আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জ্যোতি আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৭০ টাকা, টম্যাটো ৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা পিস, শসা ৬৫ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ১০০ টাকা কেজি স্পর্শ করেছে।
ছটপুজোয় ফল, ফুল এবং অন্যান্য পুজোর সামগ্রী সাজিয়ে জলের কাছে রাখা হয় সূর্য দেবতাকে আরাধনের উদ্দেশে। ছটপুজোতে বাঁশের সামগ্রীর ব্যবহার করা হয়। এটাই এই পুজোর সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের অংশ। তবে সবজির দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বাঁশের দামও। তাই এই বছর ছটপুজোর প্রয়োজনীয় সামগ্রী কুলা, ঝুরি, ডালা সবকিছুরই দাম অত্যন্ত বেশি। এখন কলকাতার বাজারে পটল ৬০ টাকা কেজি, করলা ৬০ টাকা কেজি, বেগুন ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে প্রবল বর্ষণে দক্ষিণবঙ্গের সবজি উৎপাদক জেলায় প্রচুর শীতের সবজি ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই অন্যান্য বছর নভেম্বর মাসের গোড়ায় বাজারে চলে আসে ফসল। এবার সেসব আসেনি।
মূলত এই কারণেই সবজির বাজারদর আগুন হয়ে গিয়েছে বলে বিক্রেতারা দাবি করছেন। কিন্তু তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছটপুজোয় অংশ নেওয়া মানুষজনের। হিমঘরে এখন আর সবজি নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলুর দাম কমাতে বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। সবজির দর যাতে নাগালে থাকে তার জন্য সুফল বাংলায় সস্তায় সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু খুচরো বাজারে সব সবজির দামই আকাশছোঁয়া। এখন প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমান সবজি কিনে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন ক্রেতারা।