২০২১-এর ২৫ অগস্ট স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল। কিন্তু নিয়োগে নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠতে শুরু করে সুহৃতার বিরুদ্ধে। শেষে ২০২৩-এর অগস্টে আচার্য তথা রাজ্যপাল ওই চিকিৎসককে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেন। এর পর থেকেই ফাঁকা রয়েছে পদটি। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ পদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কিন্তু তা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরে সেটি ফাঁকা কেন পড়ে রয়েছে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। আর জি করের আবহে সংগঠিত আন্দোলনে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো সংস্কারের দাবির মধ্যেই ছিল উপাচার্য পদে নিয়োগের বিষয়টিও।
সূত্রের খবর, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি মতো মোট আট জন প্রার্থী উপাচার্য পদের জন্য আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন চিকিৎসক এবং বাকিরা অচিকিৎসক। জানা যাচ্ছে, আবেদনকারী ডাক্তারদের মধ্যে প্রাক্তন উপাচার্য-সহ শহর ও জেলার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের দুই অধ্যক্ষ, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের এক জন সিনিয়র শিক্ষক-চিকিৎসক ও জেলার সরকারি মেডিক্যাল কলেজের স্বেচ্ছাবসর নেওয়া এক শিক্ষক-চিকিৎসক ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটির সদস্যেরা প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেন।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে সার্চ-কাম-সিলেকশন কমিটি ওই প্রার্থী বা আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে বাছাই তিনটি নামের তালিকা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। এর পর সেটি আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে যাবে।কিন্তু সেই প্যানেল বা তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই সূত্রের খবর। আরও জানা যাচ্ছে, আবেদনকারীদের মধ্যে যোগ্য হিসেবে প্রথম যে নামটি এসেছিল, সেই অধ্যক্ষের আর মাত্র চার মাস চাকরি রয়েছে। আর, নিয়মানুযায়ী উপাচার্যকে ছয় মাসের এক্সটেনশন দেওয়া যায়। তাই এত অল্প সময়ের জন্য কাউকে উপাচার্য পদে নিয়োগ করলে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করে ওই নামটি চূড়ান্ত করা হয়নি। অন্য দিকে, প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাঁকে আচার্য তথা রাজ্যপাল সরিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে তাঁর নাম নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে।
সব মিলিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কবে স্থায়ী উপাচার্য পাবে, তা নিয়ে এখনও সংশয় কাটেনি বলেই মত চিকিৎসক মহলের।