গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জীবনের প্রথম ভোট দেওয়া। সেই ভোটেই এই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরে প্রধান হওয়া। আর তারপর থেকেই জননেত্রী হিসেবে এলাকার যাবতীয় উন্নয়নকে পাখির চোখ করা। নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ২০ বছর বয়সি অলকা বর্তমানে মাল পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ভালোভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতিতে দেশকে ঠিকমতো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে মশগুল।
অলকা মেটেলি ব্লকের মেটেলিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সামসিং চা বাগানের লোয়ার লাইনের বাসিন্দা। চা শ্রমিক সনম নাইক ও গৃহকর্ত্রী লক্ষ্মী নাইকের একমাত্র মেয়ে। ছোট থেকেই চা বাগানে রাজনীতি দেখেছেন। তাতেই এতে আগ্রহ। আর এই সুবাদেই গত বছর জীবনের প্রথম ভোটটি দিয়ে সটান প্রধান। জীবনে এক অবাক করা উত্তরণপর্ব। অলকার কথায়, ‘যেদিন প্রধান নির্বাচিত হলাম তারপর বেশ কিছুদিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু আমার কেমন যেন এখনও গোটাটাকে স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে।’ ছোট থেকেই সবার জন্য কাজে অলকার বেশ নজর ছিল। প্রধান হওয়ার সূত্রে সেই কাজে অবাধ ছাড়পত্র। তরুণী বলে চলেন, ‘কাজ করব বলেই রাজনীতিতে এসেছি। নিজের সাধ্যমতো কাজের চেষ্টা করছি। সেই কাজে সফল হতে পারছি কি না তা জনগণই বলবে। তবে এই কাজে নিজের দল তো বটেই, বিরোধী দলগুলিও যথাসাধ্য সাহায্য করছে। আমি কৃতজ্ঞ।’
অলকাকে নিয়ে ঘাসফুল শিবির তো রীতিমতো খুশিতে ডগমগ। মেটেলিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিপল ছাত্রীর কথায়, ‘অলকা যেভাবে কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি প্রধান হিসেবে নিজের কাজকর্ম সামলাচ্ছেন তা উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে আলাদা এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গতবার ভোটে এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল ১৪টি আর বিজেপি পাঁচটি আসন পায়। কিছুদিন আগে পদ্ম শিবির থেকে একজন ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়ায় দুই দলের মধ্যে সদস্য সংখ্যার পার্থক্য কমে চার হয়েছে। প্রধান হিসেবে অলকা যেভাবে দলের আসন সংখ্যা বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছেন তাতে অনেকেই তার মধ্যে দূরদৃষ্টি দেখতে পাচ্ছেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তরুণী বেশ বিব্রত হয়ে পড়েন, ‘না, না, এ আর এমন কী। বড়রা যেভাবে পথ দেখাচ্ছেন, রাজনীতির পথে সেভাবেই চলার চেষ্টা করছি।’