প্রায় তিন মাস ধরে অজানা জ্বর নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছিল মালদার কলাইবাড়ি গ্রামে। জ্বরের সঙ্গে অসহ্য হাতে পায়ে ব্যাথা অনুভব করছিলেন তাঁরা। প্রথমদিকে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের রিপোর্টের পর জ্বরে আক্রান্ত ৫০ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। তারপরই এলাকার বাসিন্দারা চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত এমনই রিপোর্ট আসার পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। গ্রামের বহু মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রাম জুড়ে চিকনগুনিয়া রোগ ছড়িয়েছে। রোগ নির্ণয় হওয়ায় ধীরে ধীরে প্রকোপ কমে যাবে বলে অভয় দিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
যদিও এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ নেই। তবে জ্বর ও ব্যথার ওষুধ খেলেই সুস্থ হয়ে উঠবেন রোগীরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে মালদাতে চিকনগুনিয়া রোগ দেখা যায়নি। সাধারণত এই রোগ মশা থেকে ছড়ায়। ডেঙ্গির মশা থেকেই এই রোগ ছড়ায় বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। মূলত এডিস মশা থেকে এই রোগ ছড়ায়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হয় না। সমস্ত বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। রোগের উপসর্গ জ্বর ও হাত-পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। এই রোগের লক্ষ্মণ পাওয়ার পরেই ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কলাইবাড়ি গ্রামে শুরু হয়েছে বিভিন্ন রকমের সচেতনতা শিবির।
মূলত মশা থেকে এই রোগ ছড়ায়, তাই মশা নিধনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। এছাড়াও কোথাও যেন জমা জল না থাকে, সেই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন হাত-পা ঢাকা দেওয়া জামাকাপড় পড়ে। রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করে। এই সমস্ত বিষয়ে সচেতনতার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গ্রামে বসানো হচ্ছে স্বাস্থ্য শিবির। এখন পর্যন্ত গ্রামে ২৪ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে।