• কালী প্রতিমার নিরঞ্জনে ঘিরে ডিজের দাপট, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় দেদার বাজল ডিজে। কালীর প্রতিমা বিসর্জনের নামে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কার্যত ডিজের তাণ্ডব চলল। কানফাটা আওয়াজে সাধারণ মানুষের ঘুমের দফারফা হওয়ার জোগাড়। অথচ মহকুমা পুলিস-প্রশাসন সম্পূর্ণ নির্বিকার বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। পুলিসের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকে। যদিও এনিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে দায় এড়িয়েছেন অতিরিক্ত পুলিস সুপার রানা মুখোপাধ্যায়। 


    দীপাবলি ও শ্যামাপুজো উপলক্ষ্যে বোলপুর শহরজুড়েই ছিল সাজো সাজো রব। তবে বিসর্জনের দিন সেই উৎসবের আনন্দ সাধারণ এলাকাবাসী বিশেষত প্রবীণদের কাছে নিরানন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সোম ও মঙ্গলবার বোলপুর-শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন প্রান্তের অধিকাংশ ক্লাব ও পুজো কমিটি প্রতিমা বিসর্জন করে। রীতি অনুযায়ী বিসর্জনে বিভিন্ন ক্লাব শোভাযাত্রা বের করে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই শোভাযাত্রায় ঠাঁই পেয়েছে বিশাল বিশাল আকারের ডিজে সাউন্ডবক্স। ক্যাসিও নিয়ে তাসাপার্টি সহ বিভিন্ন ধরনের মিউজিক সিস্টেম। কানফাটা আওয়াজে নাচেগানে মেতে ওঠেন বিসর্জনে অংশগ্রহণকারী নবীন প্রজন্ম ও এলাকার বাসিন্দারা। 


    মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনের রতনপল্লি, শ্যামবাটি, ফুলডাঙা প্রভৃতি এলাকার বেশকিছু পুজো কমিটি শোভাযাত্রা বের করে। সেই শোভাযাত্রা রতনপল্লি বাজারে পৌঁছতেই ডিজে বক্সের আওয়াজে টেকা দায় হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ করেন বাজারে উপস্থিত মানুষজন। এমনকী দীর্ঘক্ষণ তা বাজানো হয় বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে। একইভাবে বোলপুরের ভুবনডাঙা, শান্তিনিকেতন রোড, স্টেশন রোড, জামবুনি প্রভৃতি এলাকাতেও বিভিন্ন পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় ডিজে ব্যবহার করে। এতে পথচারীদেরও চলাফেরা দায় হয়ে ওঠে। পাড়ায় পাড়ায় গভীর রাত পর্যন্ত বিসর্জনের বাজনা চলার কারণে প্রবীণদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে বলেও অভিযোগ। 


    যদিও শব্দদানবের তাণ্ডব চললেও মঙ্গলবার কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। গত সোমবার একটি ডিজে সাউন্ডবক্স আটক করে পুলিস। সেগুলি বিশ্বভারতীর ফর্টি ফাইভ কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকা থেকে পুলিস আটক করেছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই এলাকাতেই রয়েছে অ্যাডিশনাল পুলিস সুপারের অফিস। সেজন্যই কি পুলিস অতি সক্রিয়? এমনও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তাই পুলিসের দু’রকম ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় এলাকাবাসী। শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা ঋষভ মুখোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন স্থান, কাল, পাত্র দেখে পুলিসের সক্রিয়তা দেখা যায়, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যদিও এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার রানা মুখোপাধ্যায়।
  • Link to this news (বর্তমান)