• তালডাংরার ভোটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বনাম দুর্নীতির যুদ্ধ 
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: তালডাংরা উপ নির্বাচনে ফের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পই তৃণমূল কংগ্রেসের তুরুপের তাস হতে চলেছে। রাজ্য সরকারের ওই জনপ্রিয় প্রকল্পকে হাতিয়ার করে মহিলা ভোটের সিংহভাগ পেতে চাইছে শাসক দল। বিরোধীরা রাজ্যের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে ভোটে বাজিমাত করতে চাইছে। সিপিএম তথা বামেরা আবার দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি ও তৃণমূলকে এক আসনে বসিয়ে প্রচারে আক্রমণ শানাচ্ছে।


    ভোট প্রচারে বের হয়ে তালডাংরা বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী ফাল্গুনী সিংহবাবু আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে বিজেপি-র তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। দলের নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার এব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে দু’টি ছবি পোস্ট করে সরব হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে সুভাষবাবু জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইন্দপুরের ব্রজরাজপুর অঞ্চলে প্রচারে গিয়ে তৃণমূল প্রার্থী বই বিলি করেছেন। ভোট প্রচারে বের হয়ে তিনি তা করতে পারেন না। আমরা এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। সুভাষবাবু আরও বলেন, বই বিলি রাজ্য সরকারের করার কথা। তার মানে কি রাজ্য সরকার এব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছে? তাই তৃণমূল প্রার্থীকে প্রচারে বের হয়ে বই বিলি করতে হচ্ছে। আমরা রাজ্যের দুর্নীতিকে ইস্যু করে এবার ভোট ময়দানে লড়াই করছি। বাঁকুড়া সহ রাজ্যের সর্বত্র খুন-ধর্ষণ হচ্ছে। রাজ্যে পুলিস-প্রশাসন বলে কিছু নেই। আমরা প্রচারে এইসব বিষয় তুলে ধরছি। 


    বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বই বিলির অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রার্থী পেশায় শিক্ষক। ব্রজরাজপুর এলাকায় প্রচার চলাকালীন কয়েকজন ছাত্রছাত্রী প্রার্থীর সামনে হাজির হয়। তাদের হাতে বইপত্র ছিল। প্রার্থী তা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করেন মাত্র। সেই ছবি কেউ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছে। বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাজার গরম করছে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ তোলার আগে বিজেপি নেতাদের আয়নায় নিজেদের মুখ দেখা উচিত। বাংলাকে বঞ্চনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কত টাকা নয়ছয় করা হয়েছে, তা সুভাষবাবুদের বলতে হবে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মা-বোনেদের সম্মান দিয়েছে। কন্যাশ্রী সহ অন্যান্য প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হয়েছে। মহিলারা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছেন। তা এবারের উপ নির্বাচনের ফলাফলে ফের একবার প্রমাণ হয়ে যাবে। এদিন তালডাংরার খালগ্রাম এলাকায় পাঁচজন নেতা সহ ৭০ জন আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। 


    বিজেপি প্রার্থী অনন্যা রায় চক্রবর্তী বলেন, আমাদের দলেও তৃণমূল থেকে অনেকে আসতে চাইছেন। সাধারণ মানুষকে ঝান্ডা ধরিয়ে বিজেপি থেকে যোগদান করানো হচ্ছে বলে তৃণমূল মিথ্যা দাবি করছে। 


    তৃণমূল ও বিজেপি-র পাশাপাশি বামেরাও প্রচার তীব্র করেছে। এদিন তালডাংরার পাঁচমূড়া অঞ্চলে সিপিএম প্রার্থী দেবকান্তি মোহান্তির হয়ে সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের তরফে প্রচার চালানো হয়। সেখানে দলের জেলা সম্পাদক বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বাবলুবাবু বলেন, দুর্নীতির প্রশ্নে বিজেপি ও তৃণমূল কার্যত মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দুই দলের হাত থেকেই মানুষ পরিত্রাণ চাইছে। তালডাংরায় এবার বামেরা ঘুরে দাঁড়াবে।
  • Link to this news (বর্তমান)