আবাস যোজনায় প্রায় ৪০ হাজারের বেশি ‘অযোগ্য উপভোক্তা’র যাচাই প্রক্রিয়া শুরু
বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলায় জোর কদমে চলছে আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ। ইতিমধ্যেই আশি শতাংশের বেশি উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। যার মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি উপভোক্তাই বাড়ি পাওয়ার যোগ্য বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে যে সমস্ত আবেদনকারীকে ‘অযোগ্য’ উপভোক্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের আবেদন পুনরায় যাচাই করা হবে। অধিকাংশ আবেদনকারীর পাকা বাড়ি থাকার কারণে নাম বাতিল করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, যোগ্য উপভোক্তারা যাতে কোনওভাবেই বঞ্চনার শিকার না হন, সেটা দেখতে হবে। জেলা প্রশাসনকেই সেদিকে নজর রাখতে হবে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই সমীক্ষার কাজ চলবে। তার মধ্যেই সুপার চেকিংয়ের কাজও শেষ করে ফেলতে হবে প্রশাসনকে। সেইমতো সমীক্ষার জন্য প্রতিনিধি দলের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।
নদীয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘সমীক্ষার কাজ চলছে। সেইমতো যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। নির্ধারিত মানদণ্ডের কারণে যাঁদের নাম বাতিল পড়ছে, সেই সমস্ত আবেদনকারীর নাম ফের যাচাই করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত নবান্নর তরফ থেকে ১১টি মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্ধারিত মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে বহু আবেদনকারীর নাম বাতিল হচ্ছে। এমনও দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা না পাওয়ায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনেক আবেদনকারী ধার দেনা করে বাড়ি বানিয়ে নিয়েছেন। যার ফলে নতুন সমীক্ষায় তাঁদের নামও বাদ পড়ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় ১ লক্ষ ৮১ হাজার আবেদনকারীর যোগ্যতা নির্ধারণের সমীক্ষার টার্গেট রয়েছে। যার মধ্যে গত ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৩ শতাংশ অর্থাৎ এক লক্ষ ৪৯ হাজার ৮৩২ জনের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে ৭১ শতাংশ আবেদনকারী অর্থাৎ ১ লক্ষ ৬ হাজার ৩০০ জন বাড়ি পাওয়ার যোগ্য উপভোক্তা। কিন্তু, পাকা বাড়ি, তিন চাকার মোটর সাইকেল, নির্ধারিত জমি সহ বিভিন্ন জিনিস থাকার কারণে ৪৩ হাজার ৫৩২ জনের নাম বাদ পড়েছে। এই বাদ পড়া উপভোক্তার আবেদন পুনরায় যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী গোটা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে ওই আবেদনকারীরা ‘অযোগ্য’ কি না, তা ফের সমীক্ষা করা হবে। এখনও নদীয়া জেলায় ৩০ হাজারের বেশি আবেদনকারীর বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করা হবে। জেলা প্রশাসনের অনুমান, শেষ পর্যন্ত নদীয়া জেলায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ আবেদনকারীর নাম বাতিল হতে পারে। যদিও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হলে তবেই তা বলা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায়, চাপড়া, নবদ্বীপ, হরিণঘাটা, চাকদা ও শান্তিপুর ব্লকে অযোগ্য উপভোক্তার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।