• রাজ্যজুড়ে ফের সক্রিয় জালনোট কারবারিরা
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ফের সক্রিয় জালনোট কারবারিরা। বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। বিশেষ ক্যামেরাও দেশের সীমানায় লাগানো হয়েছে। কিন্তু, শীতের আমেজ শুরু হতেই ফের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ সীমান্ত টপকে এরাজ্যে জালনোট ঢুকছে। তা ভিন রাজ্যে ছড়ানোর পাশাপাশি বাংলার বিভিন্ন জেলায় ছড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এমনই ‘ইনপুট’ পেয়ে উত্তরবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদের তিনটি করিডোরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। 

    গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘মাজার জাকির’-এর সিন্ডিকেট এখন বাংলাদেশে সক্রিয় রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষে দিকে সে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়। তারপরও তার কারবার বন্ধ হয়নি। জেলে বসেই সে সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। এর আগেও তাকে বাংলাদেশ পুলিস ছ’বার গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু, তার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তার এক স্ত্রী এই চক্রের অন্যতম মাথা। সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেপ্তার করার সময় বাংলাদেশ পুলিস তার কাছে থেকে প্রায় এক কোটি টাকার জালনোট উদ্ধার করেছিল। তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা এরাজ্যের মালদহ সহ বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় রয়েছে। 

    এক আধিকারিক বলেন, মাঝে বেশ কিছুদিন এই কারবারে ভাটা এসেছিল। এখন ফের পাচারকারীদের সক্রিয়তা শুরু হয়েছে। কুয়াশা পড়তে শুরু করলেই পাচারকারীদের ‘পৌষমাস’ শুরু হয়ে যায়। এই সময় দূরের কোনও কিছু দেখা যায় না। সেই সুযোগেই পাচারকারীরা জালনোট ঢোকাচ্ছে। কারবারের রমরমা বাড়ানোর জন্য জালনোটের দাম সিন্ডিকেটের মাথারা কমিয়েছে। আগে এক লক্ষ টাকার জাল নোট তারা ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করত। এখন সেটা ৩৫ থেকে ৪০হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জালনোটের মানও উন্নত। তা ‘সুপারফাইন নোট’ নামে পরিচিত। এধরনের নোট পাকিস্তানে তৈরি হতো। এখন তা বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে। 

    সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিবারে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার জালনোট ঢোকাচ্ছে। আগে আরও বেশি নোট একসঙ্গে ঢোকানো হতো। এখন ঝুঁকি না নিয়ে অল্প অল্প জালনোট বাংলাদেশ থেকে আনা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এধরনের জালনোট উন্নতমানের কাগজ দিয়ে তৈরি হয়। মেশিনও আধুনিক। জালনোটের মান ভালো হওয়ায় অনেক সময় আমজনতা আসল ও নকলের ফারাক করতে পারে না। 

    বাংলাদেশ থেকে জালনোট এরাজ্যে আসার পর তা বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যেও পাঠানো হয়। মুর্শিদাবাদ ও মালদহের কয়েকটি এলাকায় গোয়েন্দাদের বিশেষ দল নজরদারিতে রয়েছে। তাদের দাবি, পুরো শীতের মরশুম জুড়ে এই সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকবে। এমনটা ধরে নিয়েই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরাজ্যের সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন মাথা গ্রেপ্তার হয়েছে। নতুন সিন্ডিকেট তৈরি করে এই কারবার শুরু হয়েছে। ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করলে আরও বেশি সংখ্যায় জালনোট ঢেকানোর পরিকল্পনা পাচারকারীদের রয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)