• চা বাগানের সঙ্কট ইস্তাহারে ব্রাত্যই
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: মাদারিহাট বিধানসভার উপ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বা বিজেপি কোনও দলের ইস্তাহারেই বন্ধ চা বাগান খোলার প্রতিশ্রুতি নেই। এই অভিযোগ মাদারিহাটের বন্ধ চা বাগানগুলির শ্রমিকদের। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বন্ধ বাগানের শ্রমিকরা। যদিও বিজেপির দাবি, তাদের ইস্তাহারে বন্ধ বাগানের বিষয় আছে।

    ২০০২ সাল থেকে বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগান। বাগানের উপর লাইনের শ্রমিক স্বপন সমঝার বলেন, বিজেপি বা তৃণমূল কোনও দলেরই বন্ধ বাগান খোলার গরজ নেই। দুই দলের ইস্তাহারে বন্ধ বাগান খোলার বিষয়টি না থাকাই তার প্রমাণ। তবুও তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো আমাদের বাগানে প্রচারে এসেছিলেন। কিন্তু বিজেপির লোকেরা তো এখনও আমাদের বাগানে প্রচারেই আসেনি। আগে ভোটের সময় তবুও দেখা পাওয়া যেত। এবারে এখনও তাদের দেখিনি। এদিকে ভোট তো চলে এল প্রায়।   

    একই বক্তব্য বন্ধ দলমোড়, লংকাপাড়া বা রামঝোরা চা বাগানের শ্রমিকদেরও। বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের সাফ কথা,  বাগান কবে খুলবে বা আদৌ খুলবে কি না তা নিয়ে দুই দলের নেতারা কিছুই বলছেন না। দুই দলের ভোটের ইস্তাহারেও বন্ধ চা বাগান খোলা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি। এটা কেন হল বুঝতে পারছি না।  

    মাদারিহাটের ওই চারটি বন্ধ বাগানে শ্রমিক সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। চারটি বাগানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। বাগান বন্ধ থাকায় বহু শ্রমিক ভিনরাজ্যে কাজে চলে গিয়েছেন। ভিনরাজ্যে চলে যাওয়া বন্ধ বাগানের শ্রমিকরা টাকা ও সময় খরচ করে ভোট দিতে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রেও অনীহা প্রকাশ করেছেন।

    ইস্তাহারে বন্ধ বাগানের বিষয়টি না থাকা নিয়ে কী বলছে রাজনৈতিক দলগুলি? তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, বন্ধ বাগান শুধু মাদারিহাটেই নেই। অন্য জেলাতেও আছে। ফলে মাদারিহাটে উপ নির্বাচন আছে বলে বন্ধ বাগানের বিষয়টি দলের ইস্তাহারে রাখা যায় না। তাছাড়া কেউ কি বলতে পারবে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোন দল বন্ধ বাগান খোলার বিষয়ে আজও কোনও উদ্যোগ নিয়েছে? বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সাংসদ মনোজ টিগ্গা বলেন, শ্রমিকদের অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের দলীয় ইস্তাহারে বন্ধ বাগানের ইস্যুটি অবশ্যই আছে। উপ নির্বাচন মিটলেই আমাদের দল বন্ধ বাগান খোলার দাবিতে জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও করবে। ধর্না কর্মসূচিও হবে। 

    মাদারিহাটের উপ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী বিকাশ চম্প্রমারী বলেন, তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলই বন্ধ বাগান খুলতে ব্যর্থ। তারা কোনও উদ্যোগই নেয়নি। এনিয়ে তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। দুই দলের ভোটের ইস্তাহারে বন্ধ বাগানের বিষয়টি না থাকা, তা আরও একবার প্রমাণ করল। সিটুর জেলা সাধারণ সম্পাদক বিকাশ মাহালি বলেন, বিজেপি তৃণমূল দু’দলই পুঁজিপতি চা মালিকদের দালালি করে। বন্ধ বাগান খোলা নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যথা নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)