সংবাদদাতা, মানিকচক: আবাসের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা দাবি করায় সমীক্ষা করতে আসা এক যুবককে আটকে রেখে পুলিসের হাতে তুলে দিলেন ক্ষুব্ধ জনতা। বুধবার নুরপুরের বৈদনাথপুর গ্রামের ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত শেখ মাতিন (৩০) মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনায় যুক্ত এক সরকারি আধিকারিকও। অভিযুক্ত মাতিনকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে মানিকচক থানা। মানিকচক ব্লক প্রশাসনও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
গ্রামবাসীদের দাবি, মাতিন স্বীকার করেছেন, মানিকচক ব্লক কৃষিদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট টেকনোলজি ম্যানেজার বিজনকুমার মিত্রর নির্দেশে তিনি ঘরের তালিকা যাচাই করছেন। টাকা দাবি করায় সমীক্ষককে আটক করে পুলিসের হাতে তুলে দেন গ্রামের মানুষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সমীক্ষক হিসেবে যাওয়ার কথা ছিল মানিকচক ব্লক কৃষিদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট টেকনোলজি ম্যানেজারের। কিন্তু সমীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। সমীক্ষক হিসেবে মাতিনের নাম না থাকলেও তিনি কেন সমীক্ষায় গিয়ে টাকা চাইলেন এই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসী। যদিও বিজনকুমার মিত্রর দাবি, আমি মাতিনকে যেতে বলিনি। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। পুরো ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী। সারা রাজ্যের সঙ্গে মালদহের মানিকচকেও চলছে আবাস প্লাসের সমীক্ষা। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালিকা অনুযায়ী যাচাই করছে সমীক্ষক দল। এদিন মানিকচক ব্লকের নুরপুর পঞ্চায়েতের বৈদ্যনাথপুর গ্রামে আবাসের তালিকা যাচাই করতে আসেন শেখ মাতিন নামে এক ব্যক্তি। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাতিনকে পাঠানো হয়েছে বলে জানান গ্রামবাসীরা। সেইমতো এলাকার বিভিন্ন বাড়ি পরিদর্শন করেন শেখ মাতিন।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, বাড়ি পরিদর্শন করে সমীক্ষক মাতিন সেবক বসাক ও অজয় বসাকের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা করে দাবি করেন। অজয় ও সেবকের পাকা বাড়ি থাকায় এই টাকা দাবি করেন মাতিন।
অজয় বলেন, আবাসের তালিকায় আমার স্ত্রীর নাম রয়েছে। কিন্তু পাকা বাড়ি থাকায় দশ হাজার টাকা দাবি করেন সমীক্ষক। মাতিন বলেন, কাঁচা বাড়ি দেখিয়ে নাকি আমার ঘরের টাকা পাইয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ আমি এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সিদ্ধার্থ বসাককে জানাই। খবর পেয়ে পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মাতিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর কথায় সন্দেহ হতেই খবর দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনকে। তারপরই ঘটনাস্থলে আসেন মানিকচক থানার পুলিস এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে শেখ মাতিনকে আটক করে নিয়ে যায় মানিকচক থানার পুলিস। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিদ্ধার্থ বসাক বলেন, অভিযুক্ত শেখ মাতিন পার্শ্ববর্তী গ্রাম মধুপুরের বাসিন্দা। এলাকায় পশু চিকিৎসক হিসেবে তাঁর পরিচিতি। তিনি গ্রামের প্রায় সাতটি বাড়িতে টাকার কথা বলেছেন।