পুজোর ছুটি শেষে গত ২ নভেম্বর পাঠাগারে এসে গ্রন্থাগারিক দেখেন, হাজার তিনেক বই উধাও। গ্রন্থাগারের সামনের দরজা ঠিক থাকলেও পিছনের দরজার তালা খোলা। পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে আবদুল ওদুদ আলি শাহ নামে এক জনকে গ্রেফতার করে। তাঁর পুরনো জিনিসপত্র বেচাকেনার দোকান রয়েছে। সেখানেই উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া বইগুলি। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই ছাত্রের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও দেখা যায়, সাইকেলে চাপিয়ে অনেক দিন ধরে বইগুলি বিক্রি করছিল ছাত্রটি।বাইশ-তেইশ বস্তা বই বেচে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা পেয়েছিল। পুলিশকে সে জানিয়েছে, পুরো টাকাতেই সে পুজোয় ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া করেছে। পুলিশ জানাচ্ছে, চুরির কথা পরিবার জানে না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নাবালক ছাত্রটির বাবা মণ্ডপসজ্জার সহায়ক কর্মী। মা পরিচারিকা। চার বছরের এক বোন-সহ চার জনের সংসার। পূর্ত দফতরের জমিতে ছোট্ট ঘরে বাস। সংসারে অভাব। তবে এলাকার বাজার কমিটি পরিবারটিকে সহযোগিতা করে। ছাত্রের পড়াশোনাতেও সাহায্য করে তারা। ছাত্রটি যে স্কুলের পড়ুয়া, সেখানকার এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ছাত্রটি পড়াশোনায় মোটামুটি। ছেলেটি অপরাধ করেছে ঠিকই। কিন্তু নিজের মুখে তা স্বীকারও করেছে। যিনি ছেলেটির কাছ থেকে লাইব্রেরির বই কিনলেন, তিনি বাধা দিলে ভাল হত। ও স্কুলে ফিরে পড়াশোনা করে ভাল চিন্তায় ফিরুক, এটাই চাই।’’
গ্রন্থাগারিকের বক্তব্য, ‘‘বইগুলি গ্রন্থাগারে আসুক আর পাঠক বাড়ুক। একেবারেই তলানিতে পাঠক সংখ্যা। বহু পুরনো বই পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।’’