সম্প্রতি দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করতে পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একঝাঁক অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্র রাজ্যকে প্রাপ্য টাকা দিলেও শাসকদলের নেতারা তা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার পাল্টা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল।
তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, আপাতত রণকৌশল ঠিক করা চলছে। এ বারের কলকাতা সফরে শাহ তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতার সরকারকে আক্রমণ করেছেন। তাই ঠিক হয়েছে, বিধানসভার অধিবেশনে রাজ্য সরকার পাল্টা তথ্য তুলে ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ আনবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের তুলনায় নরেন্দ্র মোদীর সরকার রাজ্যকে অনেক বেশি অর্থ দিয়েছে। শাহের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের জমানায় পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয়েছিল ২ লক্ষ ৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার পশ্চিমবঙ্গকে দিয়েছে ৭ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। শাহের এমন দাবিকে খণ্ডন করতে রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে আক্রমণ শানাবেন বলে ঠিক হয়েছে। পাল্টা জবাব দিতে পারেন পদ্মশিবিরের বিধায়কেরাও। এমতাবস্থায় অধিবেশন কক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিধানসভার সচিবালয়।
গত তিন বছরের সময়কালে নানা ইস্যুতে বিধানসভার কক্ষে সংঘাতে জড়িয়েছেন বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়কেরা। এমনকি, দু’দলের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছিল। ফলস্বরূপ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য বিধানসভায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে এর আগেও বেশ কয়েক বার প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এক বিজেপি বিধায়কের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার যদি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে, তবে আমাদের বিধায়কেরাও পাল্টা জবাব দেবেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত ১৩ বছর ধরে বিরোধী দলের কোনও বিধায়ককে সরকারের কোনও উন্নয়নমূলক কাজে শামিল হতে দেওয়া হয় না। এমনকি কোনও প্রশাসনিক বৈঠকে ডাকাও হয় না। যাঁরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে প্রস্তাব এনে আলোচনার কথা ভাবছেন, তাঁরা যে রাজ্যের বিরোধীদের কী ভাবে বঞ্চিত করে রেখেছেন আমরা সে কথাও বিধানসভায় তুলে ধরব।’’