আচমকা অগ্নিকাণ্ড এবং পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা কলকাতা শহরের এক পুরনো সমস্যা। অভিযোগ, এ নিয়ে সতর্কতা ও নজরদারির অভাবও যথেষ্ট। ‘পোস্তা মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এসে বুধবার তা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই দোকান-বাড়ির সামনে প্লাস্টিক ও অন্য দাহ্য বস্তু জমা করে রাখেন। কেন রাখেন? বড়বাজারে বা জোড়াসাঁকোয় আগুন লাগলে দমকলকে দোষ দেবেন না! দমকলের যাতায়াতের জায়গাও নেই সব জায়গায়। একই অবস্থা রয়েছে গার্ডেনরিচ ও তপসিয়ায়।’’ তার পরেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত এ নিয়ে কলকাতা কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা করুন। নিজে বাঁচলে তবেই না অন্যকে বাঁচাতে পারবেন।’’
বিপজ্জনক, বেআইনি বাড়ি নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অনেক পুরনো বাড়ি রয়েছে। সে সব আপনারাই ব্যবহার করুন। কিন্তু মেরামতি করে নেওয়া হোক।’’ পাশে উপস্থিত কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মাকে তিনি নির্দেশ দেন, পুজো মিটে গেলে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ও বিপজ্জনক বাড়ি— এই দু’টি বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী, দমকল, স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ, পুলিশ, পুরসভা-সহ সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করতে হবে।
ছটপুজোয় গঙ্গা বা পুকুরে যাওয়া পুণ্যার্থীদের তাড়াহুড়ো করতে এ দিন বারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ছটপুজোর পুণ্যার্থীদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘নির্দিষ্ট দলে বিভক্ত হয়ে ছটপুজো পালন করবেন। কোনও তাড়াহুড়ো করবেন না। পদপিষ্ট হওয়ায় সম্ভাবনা থেকে যায়। গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে পুরসভার তরফে আলো, জল-সহ নানা পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে।’’
বড়বাজার অঞ্চলে ভোট নিয়েও আক্ষেপ শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে আমাদের মাত্র এক জন কাউন্সিলর। লোকসভাতেও ভোট পাইনি। কিন্তু আমরা আছি কাকের মতো, কাক যেমন বছরে ৩৬৫ দিন থাকে। মরসুমি কোকিলের মতো নই!’’
এই অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষার মানুষের সংহতির উপরে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এখানে কেউ কারও জাত, ধর্ম, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে প্রশ্ন করে না। বাংলাকে নিজের জায়গা মনে করুন। সে ভাবেই মিলেমিশে থাকুন।’’ বড়বাজার অঞ্চলে তোলাবাজি বন্ধেও কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন পোস্তা ছাড়াও চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে মোট দশটি জগদ্ধাত্রী পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।