• আবাস যোজনা প্রকল্পে ‘প্রকৃত’ গ্রাহকদের অর্থ অন্য একাউন্টে? ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ হাইকোর্টের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ নভেম্বর ২০২৪
  • বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে ওঠে আবাস যোজনা বিষয়ক মামলা। এদিন রাজ্যের দাখিল করা রিপোর্ট দেখে আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে ফৌজদারি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আবাস যোজনা দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে তীব্র ভর্ৎসিত রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দীর্ঘদিন টাকা মেলেনি ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচ বাসিন্দার। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই পাঁচজন। সেই মামলায় রিপোর্ট দেওয়ার পরে রাজ্যকে তীব্র তিরস্কার করল কলকাতা হাইকোর্ট।

    এদিন বিচারপতি রবি কিষান কাপুরের স্পষ্ট নির্দেশ,’ বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের (ক্যানিং ১ ব্লক ইট খোলা গ্রাম পঞ্চায়েত) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সম্পূর্ণ তথ্য কোর্টে জমা দিতে হবে।’ এর পাশাপাশি পঞ্চায়েত দফতরের সচিবকে, ক্রিমিনাল প্রসেডিংস প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ বিচারপতির।

    এদিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কাপুর বলেন, ‘এটা ইচ্ছাকৃত দুর্নীতি’। সিঙ্গেল বেঞ্চে এই মামলায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ‘পাঁচ মামলাকারীর তিনজনের তিনটি ইনস্টলমেন্টের টাকা তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না গিয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে গেছে। বাকি ২ জনের প্রথম ইন্সটলমেন্টের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে গেছে’। মামলাকারীদের দাবি,’টাকা তাঁদের নামের অ্যাকাউন্টে এলেও যে অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে, সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর তাদের নয়।’ তারপরেই স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্তের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তাঁরা।

    গত ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকার জন্য আবেদন করেন ওই পাঁচ মামলাকারী। কিন্তু দীর্ঘদিন টাকা না আসায় তাঁরা পঞ্চায়েতকে সমস্যার কথা জানান। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রথমে জানায়, ‘টাকা আসেনি’। তারপর বলে, ‘তাঁরা পাওয়ার যোগ্য নয়’। তারপরেই ওই পাঁচজন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এই ঘটনায় বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও তলব করেছেন বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুর। অবিলম্বে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ।

    জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকার জন্য আবেদন করেন ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিরাজুল মণ্ডল-সহ পাঁচ বাসিন্দা। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ না পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা করা হলে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। সে ব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুর। বিচারপতি অবিলম্বে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর তলব করেন। রাজ্যকে ভর্ৎসনা করে মন্তব্য করেন, ‘এটা ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি’। এইরকম জালিয়াতি অন্যান্য ব্লকে হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হোক বলে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চিতদের একটি বড় অংশ দাবি করেছেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)