দুর্গাপুজো বাঙালির শারদ উৎসব হলেও, জগদ্ধাত্রী পুজো কৃষ্ণনগরের মানুষের কাছে শারদ উৎসব। কৃষ্ণনগর ও তার আশেপাশে ছড়িয়ে রয়েছে বুড়িমার একাধিক গল্প। এই বুড়িমার পুজো শুরুর ইতিহাস নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে চাষাপাড়ার তৎকালীন লেঠেলদের এই পুজোর দায়িত্ব দেন। আবার অনেকের মতে, মায়ের পুজো রাজবাড়ির বাইরে ছড়িয়ে দিতে রাজা এই পুজো শুরু করেন। জগদ্ধাত্রী পুজো চার দিনের হলেও কৃষ্ণনগরে মূলত একদিনের পুজো হয়। কৃষ্ণচন্দ্রের শহরে মূল পুজো হয় নবমীর দিনে। এই পুজো দেখতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেন কৃষ্ণনগরে। প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে ভোগ প্রসাদ দেওয়া হয়। এই পুজোর জন্য কোনও চাঁদা তুলতে হয় না, মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে চাঁদা জমা দিয়ে যান। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পরে 'বুড়িমা'র পুজোর জন্য। ১৫ কেজির সোনার অলংকার দিয়ে সাজানো হয় 'বুড়িমা'কে।
এই পুজোর কোনও থিম হয় না, এখানকার থিমই হল মানুষের আবেগের প্রতিমা 'বুড়িমা'। রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই এখানকার পুজো শুরু হয় বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। তবে প্রথম থেকেই এই পুজো 'বুড়িমার পুজো' নামে পরিচিত ছিল না। নামটা খুব সম্ভবত সত্তর-পঁচাত্তর বছর আগে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রবীণদের অভিমত। বুড়িমার পুজোয় দেবীর আগমন থেকে বিসর্জন সবেতেই রয়েছে অনন্যতা। কৃষ্ণনগরের সকল প্রতিমা বিসর্জনের পরে সব শেষে বুড়িমার বিসর্জন করা হয়। প্রথা মেনে দেবী কাঁধে চেপেই বিসর্জনের পথে যান। আগে তাঁকে রাজবাড়ি ঘোরানো হয়, তার পরে নিয়ে যাওয়া হয় জলঙ্গীর ঘাটে। বিসর্জন দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় জমান ভক্তরা।