বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আরজি কর মামলার সপ্তম শুনানি ছিল। প্রথমে ঠিক ছিল মঙ্গলবার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। পরে পিছিয়ে গিয়ে শুনানির দিন স্থির হয় বুধবার। কিন্তু সে দিনও পিছিয়ে যায় শুনানি। দু’দিনে তিন বার পিছিয়ে শেষমেশ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলাটি শোনে। শুনানির সময়ে এক আইনজীবী আর্জি জানান, এই মামলার বিচার পশ্চিমবঙ্গ থেকে স্থানান্তরিত করা উচিত। তাঁর মতে, এই রাজ্যের পরিস্থিতি ‘অস্থির’। এ কথা শুনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা মণিপুরের কিছু মামলায় এমন করেছি। কিন্তু এই মামলার ক্ষেত্রে এ রকম কিছু করছি না। মামলার বিচার পর্ব স্থানান্তরিত হচ্ছে না।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আগে বিচার শুরু হোক।’’ প্রসঙ্গত, আগামী ১১ নভেম্বর, সোমবার থেকে শিয়ালদহ আদালতে আরজি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের মামলার বিচার শুরু হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন অন্য এক আইনজীবী বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থা এবং রাজ্যের পুলিশের উপর আস্থা হারাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষজন।’’ তাঁকে ধমক দেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘‘লোককে নিয়ে কথা বলবেন না। আপনি কার হয়ে এখানে সওয়াল করছেন? এই ধরনের মন্তব্য করবেন না। মনে হচ্ছে যেন ক্যান্টিনের মতো গল্পগুজব চলছে আদালতে!’’
আরজি কর-কাণ্ডে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এক মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পর ৯০ দিন কেটে গিয়েছে। তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই।’’ এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি নিম্ন আদালতের বিচারকের ক্ষমতা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রায়াল বিচারকের পুনরায় তদন্ত করা নিয়ে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, আরজি করে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় গত ৪ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে এই ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের।