• শীত পড়তেই পরিযায়ী পাখির দেখা! সাগরপারের পাখির ডানার রঙে উজ্জ্বল আকাশ...
    ২৪ ঘন্টা | ০৮ নভেম্বর ২০২৪
  • প্রদ্যুত দাস: পাখির কোলাহলে ঘুম ভাঙল দক্ষিণ পান্ডাপাড়ার প্রভাত বসুর। জানালা খুলে দেখলেন কোনও পরিচিত মুখ নয়, বরং রং-বে-রঙের অচেনা পাখির সমারোহ। কারো ঠোঁটটা একটু বেশি বড়। কারো আবার চেহারাটা অনেকটা হাঁসের মতো। কিন্তু নামটা কী? জানা নেই তাঁর। তাই ক্ষেতের কাজ করতে-করতে ওঁদের গুঞ্জন আর বিচরণ দেখতে দেখতে দিন কাটছে ওই এলাকার মানুষজনের। 

    পরিযায়ী পাখি! শব্দটা অনেকেরই জানা। কিন্তু এরা কারা? প্রায় প্রতি বছর একটি বিশেষ ঋতুতে পৃথিবীর কোনো না কোন দেশ থেকে বিশ্বের অন্য অঞ্চলে চলে যায় এই পাখিরা। সেই ঋতু সমাপনীতে আবার ফিরে যায় আগের জায়গায়। এই আসা-যাওয়া চলতে থাকে প্রতি বছর কমবেশি একই সময়কালে।

    এবার জলপাইগুড়ি জেলার গরুমারা অভয়ারণ্যের ময়নাগুড়ি ব্লকের রামসাই জঙ্গল এলাকা-সহ জলপাইগুড়ি জলঢাকা, মূর্তি তিস্তা প্রভৃতি নদী সংলগ্ন এলাকা-সহ সদর ব্লকের খড়িয়া পঞ্চায়েতের অধীন দক্ষিণ পান্ডাপাড়ার বিশ্বাসপাড়া ইটভাটার এই বিলে বেশ কয়েকহাজার পাখি আসবে বলে আশা রাখছেন বার্ড ওয়াচাররা। বর্তমানে প্রায় ১-২ হাজার পাখি চলে এসেছে। তার মধ্যে দুই তৃতয়াংশই পরিযায়ী পাখি বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা। বার্ড ওয়াচারদের মতে, লেজার হুইসলিং টিল, গ্রে হেডেড ল্যাপ উইংয়ের দেখা মিলেছে ইতিমধ্যে। এছাড়াও শঙ্খচিলের পাশাপশি অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া এবং শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে প্রচুর অতিথি এসেছে এই বিলে। এদের বিজ্ঞানসম্মত নাম কেউ বলতে না পারলেও এলাকার মানুষ তাঁদের চিহ্নিত করছেন কানি বক, গোবগা, ধুপনি, গলিন্দা-সহ নানা নামে।

    পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও পাখি গবেষক প্রাণীবিদ অধ্যাপক ড. রাজা রাউত বলেন, আমরা 'অতিথি দেবো ভব' দর্শনে বিশ্বাসী। বাৎসরিক এই পরিযান পাখিদের রাজ্যে একটি অরিহার্য অঙ্গ। পাখিদের কাছে কোনো দেশের সীমানা নির্দিষ্ট নয়, তাই প্রতি বছর তারা আমাদের আশপাশের এসব অঞ্চলে ভিড় জমায়। প্রয়োজন আমাদের এই অতিথিদের আশ্রয় ও বাসস্থান সুনিশ্চিত করা, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া। যেমনটা আমাদের পূর্বপুরুষেরা এতদিন করে আসছিলেন। ওরা ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকব।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)