তন্ময়ের বিরুদ্ধে কিছু দিন আগে এক মহিলা সাংবাদিক হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি অভিযোগ করেন, সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়ে তন্ময় তাঁর ‘কোলে উঠে পড়েন’। এই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে দল। সিপিএমের তরফে সে দিনই তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, তন্ময়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখবে দলের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি (আইসিসি)। ওই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে দলের তরফে। আগামী শনিবার এই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইসিসি ডেকেছে তন্ময়কে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবেন বলেও জানান তন্ময়। তবে তার আগে নিজের ঘরে সিসি ক্যামেরা বসালেন বর্ষীয়ান নেতা।
বরাহনগরের যে বাড়িতে তন্ময় থাকেন, তার বাইরের ঘরটিতে বসেই তিনি সাধারণত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কেউ সাক্ষাৎকার নিতে চাইলেও তাঁকে ওই ঘরে বসানো হয়। যে মহিলা সাংবাদিক তন্ময়ের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন, তিনিও ওই ঘরে বসেই সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ওই ঘরে ক্যামেরা বসানো প্রসঙ্গে তন্ময়ের বক্তব্য, ‘‘পরিস্থিতির কারণেই সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি।’’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন নিজের বাড়িতে দেখা করেন তন্ময়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সেলিমও। যে দিন এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে, সে দিন সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম বলেছিলেন, ‘‘আমি জানি না কেন তন্ময় নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন।’’ তার পরেই তাঁকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছিলেন সেলিম।
পুলিশের তদন্তের মুখোমুখিও হচ্ছেন তন্ময়। বরাহনগর থানায় ওই মহিলা সাংবাদিক তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ইতিমধ্যে থানা থেকে তাঁকে তিন বার তলব করা হয়েছে। প্রতি বারই তিনি হাজিরা দিয়েছেন। প্রথম দিন তিন ঘণ্টা, পরের দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তন্ময়কে। পাশাপাশি তিনি দলীয় তদন্তের মুখোমুখি হতে চলেছেন শনিবার। সে দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আলিমুদ্দিনে যেতে বলা হয়েছে তন্ময়কে। গত রাজ্য সম্মেলনের পরেই দলে মহিলাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য আইসিসি তৈরি করেছিল সিপিএম। সর্বভারতীয় স্তরেও এমন কমিটি রয়েছে সিপিএমে। বাংলায় সিপিএমের এই কমিটির মাথায় রয়েছেন বর্ধমানের মহিলা নেত্রী অঞ্জু কর। তাঁর নেতৃত্বেই দলে তন্ময়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।