সংবাদদাতা, ঘাটাল: ভেড়ির জল তুলে মাঠে ধান জমিতে ফেলা হচ্ছে। ফলে নষ্ট হতে বসেছে দাসপুর-২ ব্লকের লক্ষ্মীকুণ্ডু গ্রামের কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান। বহু বসতবাড়িও জলে প্লাবিত হয়েছে। ডুবছে এলাকার রাস্তাও। এনিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওই গ্রামের ভেড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। ক্ষুব্ধ চাষিরা ভেড়িতে গিয়ে খুলে ফেলে দেন পাম্পের স্যাকশন পাইপ। এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হলে ঘটনাস্থলে পুলিস পৌঁছয়। পুলিস জানিয়েছে, চাষের জমির ক্ষতি করে ভেড়ির জল ধান জমিতে ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। খুকুড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা কর্মকার রানা চাষিদের বিক্ষোভকে সমর্থন করে বলেন, আমরা চাষিদের ক্ষতি করে কোনও কাজ করতে দেব না। ভেড়ির মালিক এই ধরনের কাজ আগামী দিনে যাতে না করেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বছর পাঁচেক আগে ওই গ্রামে বেশ কয়েক একর জমি নিয়ে ওই ভেড়িটি তৈরি হয়। পাশেই রয়েছে বিস্তীর্ণ চাষের জমি। ওই ব্লকের লক্ষ্মীকুণ্ডু ছাড়াও শ্রীপুর, খাসচক, রাধাবল্লভচক, কুচামারি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষিদের একমাত্র আয়ের উৎস ধানচাষ। কৃষকদের অভিযোগ, কোনও কারণে ভেড়িতে একটু বেশি জল জমে গেলেই কাউকে না জানিয়ে ভেড়ির মালিক বেশ কয়েকটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বসিয়ে জল তুলে সরাসরি মাঠে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। ফলে প্রায়ই মাঠের ফসলের ক্ষতি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অথচ ওই ভেড়ি থেকে জল বের করে দূর্বাচটি খালে ফেলার জন্য একটি সরু নিকাশি খাল রয়েছে। কিন্তু ভেড়ির মালিক সেই খালটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করার ফলে সেটি মজে গিয়েছে। ভেড়িতে বেশি জল থাকলে মাছ ধরতে সমস্যা হয়। তাই যখনই মনে হয় ভেড়ির মালিক ভেড়ির জল পাম্প দিয়ে তুলে চাষ জমিতে ফেলে দেন। বর্তমানে ওই মাঠে ধান পেকে আসছে। কয়েক দিনের মধ্যে কিছু কিছু ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। চাষিদের মধ্যে রথীন শী, অসীমা সামন্ত, শচীনন্দন সামন্ত, সীতারাম ঘোড়া বলেন, এই সময়েই বুধবার থেকে ছ’-সাতটি পাম্প বসিয়ে ভেড়ির জল সরাসরি পাকা ধানের জমিতে ফেলতে শুরু করা হয়েছে। ফলে মাঠে অনেকটা করে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। অসীমা সামন্ত বলেন, মাঠ জলে ভর্তি হয়ে এলাকার বহু বাড়িতেও ঢুকতে শুরু করেছে। রাধাবল্লভচক থেকে লক্ষ্মীকুণ্ডু যাওয়ার ঢালাই রাস্তাটিও ডুবে গিয়েছে। ভেড়ির মালিক দেবজ্যোতি দত্ত জানান, আমি কয়েকদিন ভেড়িতে যাওয়ার সময় পাইনি। তাই কী ঘটনাটি ঘটেছে খোঁজ নিয়ে জানাব।-নিজস্ব চিত্র