• গভীর রাতে ফাঁকা বেলতলায় জগদ্ধাত্রীকে ভোগ নিবেদন করা হয়
    বর্তমান | ০৮ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া মহকুমায় একাধিক পারিবারিক জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। সবগুলিই বেশ প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত। নানা অবাক করা রীতিনীতি মেনে হয় সেইসব পুজো। যেমন কেতুগ্রামের গোমাইয়ের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয় গভীর রাতে ফাঁকা বেলতলায় জগদ্ধাত্রীকে শিবাভোগ দেওয়াই রীতি। পুরোহিত ওই ভোগের নৈবেদ্য সাজিয়ে একা গিয়ে দিয়ে আসেন। দীর্ঘবছর ধরে এই রীতি চলে আসছে। পরিবারের সদস্য অধ্যাপক ডঃ শান্তনু চট্টোপাধ্যায়, সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, গ্রামের সীমানায় একটি বেলগাছতলায় ওই শিবাভোগ দেওয়া হয়। এখানে নবমীর দিনই তিনদিনের পুজো করা হয়। চট্টোপাধ্যায় পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের পূর্বপুরুষ রামতনু চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই এই পুজো শুরু হয়। 

    শোনা যায়, তিনি নাকি দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। সেই থেকে আজও পুরনো রীতি ও নিয়ম মেনেই দেবীর আরাধনা করা হয়। নবমী তিথিতে তিনটি পুজোয় থাকে শাক্ত তন্ত্রাচার মতে নৈবেদ্য, ভোগ, বলি ও কুমারীপুজো। দুপুরে গ্রামের মানুষদের নিয়ে পঙক্তিভোজন করানো হয়। পরিবারের সদস্যরা বলেন, তিনটি পুজোর সমস্ত ভোগই কারণবারি সমেত নিবেদন করতে হয়। দেবী জগদ্ধাত্রী এসে ভোগ গ্রহণ করেন এটা আমাদের বিশ্বাস। ভোগ দেওয়ার সময়ে শেয়াল এসে খেয়ে যায়। তখনই আমাদের পুজো সম্পন্ন হয়। এটাই দীর্ঘবছর ধরে হয়ে আসছে। 

    অন্যদিকে কাটোয়া ২ ব্লকের শ্রীবাটী অঞ্চলের নন্দীগ্রামের রায় পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজোও বেশ প্রাচীন বলে পরিচিত। শোনা যায়, নন্দীগ্ৰামে রায় পরিবারের রেনুপদ রায়ের স্ত্রী দীনতারিনী দেবী মা জগদ্ধাত্রীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেন। প্রাচীন রীতি মেনে আজও পুজো করা হয়। রায় পরিবারের সদস্যরা জানান, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো একদিনেই করা হয়। পুজোর বিশেষ আকর্ষণ কুমারী পুজো। 

    পাশাপাশি কাটোয়ার বিজনগর গ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের জগদ্ধাত্রী পুজোয় গ্রামবাসীরা আনন্দে মেতে ওঠেন। পরিবারের পূর্বপুরুষ রামকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রধান খাজাঞ্চি। তাঁর উত্তরসূরী চণ্ডীচরণ চট্টোপাধ্যায় এই পুজো শুরু করেন। একই দিনে সপ্তমী অষ্টমী ও নবমী পুজো হয়। তিনবার বলিদান হয়। দশমীর দিন পুজো শেষে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা।
  • Link to this news (বর্তমান)