নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চিতাবাঘ আটকে পড়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ বনদপ্তরের। চা বাগান থেকে ‘কাঁটাতার’ খোলা শুরু। পয়লা নভেম্বর মেটেলির ধূপঝোরা সংলগ্ন চা বাগানে কাঁটাতারে আটকে পড়ে একটি চিতাবাঘ। সেটিকে উদ্ধার করতে কালঘাম ছুটে যায় বনদপ্তরের কর্মীদের। এদিকে, দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারে আটকে থেকে সমানে ছটফট করতে থাকায় জখম হয় চিতাবাঘটি। এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে বনদপ্তর। ডুয়ার্সের কোথায় কোথায় চা বাগানে কাঁটাতার ও ‘ব্লেড-তার’ বসানো রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে অভিযান চালায় বনদপ্তর। সেইমতো নোটিস দেওয়া হয় চা বাগান কর্তৃপক্ষকে। দ্রুত ওই কাঁটাতার খুলে ফেলতে বলা হয়। বনদপ্তরের নির্দেশে বৃহস্পতিবার মেটেলিতে চা বাগান থেকে কাঁটাতার খোলার কাজ শুরু হয়।
গোরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে বলেন, চা বাগানে কাঁটাতার কিংবা ব্লেড-তারের কারণে বন্যপ্রাণীদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এটা কোনওভাবে বরদাস্ত করা হবে না। বেশকিছু চা বাগানে এ ধরনের কাঁটাতারের প্রমাণ পেয়েছি আমরা। সেগুলি দ্রুত খুলে ফেলতে বলা হয়েছে চা বাগান কর্তৃপক্ষকে। সেইমতো মেটেলির কয়েকটি চা বাগান কাঁটাতার খুলতে শুরু করেছে।
চা বাগান সূত্রে খবর, মূলত গবাদি পশুদের ঢুকে পড়া রুখতে এ ধরনের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়ে থাকে। কোথাও আবার খরগোশ ধরতে ধারালো তারের ফাঁদ পাতা হয়। এ ধরনের তারের ফাঁসে আটকে পড়লে বন্যপ্রাণীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে বলে মনে করছেন বনকর্তারা।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় হাতির হানা থেকে জমির ফসল বাঁচাতে কিছু মানুষের মধ্যে অবৈধ বৈদ্যুতিক তারের বেড়া দেওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ধরনের বেড়ার সংস্পর্শে এসে অনেক হাতির মৃত্যুও হয়েছে। বারবার অভিযান চালিয়ে কিংবা সচেতনতামূলক প্রচার করেও ওই প্রবণতা বন্ধ করা যায়নি। এরইসঙ্গে এবার কিছু চা বাগানে কাঁটাতারের বেড়া কিংবা ‘ব্লেড তার’-এর বেড়া দেওয়া শুরু হয়েছে। যা বন্যপ্রাণীদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে বলে মনে করছেন বনকর্তারা।
ধূপঝোরার কায়েতপাড়া এলাকায় যে বাগানের কাঁটাতারের বেড়ায় দিনকয়েক আগে চিতাবাঘটি আটকে পড়েছিল, গোরুমারার জঙ্গল থেকে সেখানে হামেশাই বন্যপ্রাণীরা চলে আসে। চা বাগানের ভিতর দিয়ে লোকালয়ে ঢোকার চেষ্টা করে হাতির দল। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ওই কাঁটাতারের বেড়া হাতির ক্ষেত্রে বিপদের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বনকর্মীরা। ফাইল চিত্র।