মেডিক্যাল পড়ুয়াদের পরীক্ষার লাইভ স্ট্রিমিং স্ট্রিমিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে এবার মুখ খুলল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। এর আগে নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের সর্বশেষ বৈঠকে থ্রেট কালচার নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন কিঞ্জল নন্দ, অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদাররা। সেখানেই ডাক্তাররা অভিযোগ করেছিলেন, থ্রেট কালচার চালানো বহু জুনিয়র ডক্তারই পরীক্ষায় পাশ করার যোগ্য নয়। এই আবহে এবার রাজ্য সরকার নির্দেশ দিল, এবার থেকে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কেন্দ্রীয় ভাবে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের সদস্যরা। যদিও এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, গতকাল আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধিরা। সেখানে প্রায় চার ঘণ্টা ছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই সময় পরীক্ষার লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে দেবাশিস হালদার বলেন, ' তিনি আগেই এটা নবান্নের বৈঠকে বলেছিলেন। ফেল করার মতো ডাক্তারি পড়ুয়া আমরাও চাই না। যাঁরা পরীক্ষায় ১০ পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা যেন ১০০ না পেতে পারেন। এটি যদি সত্যিই সরকার করতে পারে, তা অবশ্যই ভাল। শুনেছি একটি কমিটি গঠন হয়েছে। সেই কমিটি যদি এই কাজ করতে পারে, তবে অবশ্যই ভাল হবে।'
প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে জুনিয়র ডাক্তারদের পরীক্ষায় একের পর এক অভিযোগ সামনে এসেছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁস, দেদার টুকলি, বিরোধিতা করলেই নম্বর কমিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই পরিস্থিতিতে নবান্নে যখন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হয়, তখনও সেই বিষয়টি উঠে আসে। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, এমন পদক্ষেপ করা হবে যে পরীক্ষাকেন্দ্রে কেউ ঘাড় ঘোরাতে পারবেন না। তারপরই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক হয় রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের। তাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষার লাইভ স্ট্রিমিং করা হবে। এই আবহে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, 'প্রতিদিন যতক্ষণ পরীক্ষা চলবে, ততক্ষণের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হতে পারে। প্রতিদিনের সিসিটিভি ফুটেজ আলাদা-আলাদা ফোল্ডারে থাকবে। পরীক্ষা প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার তিনদিনের মধ্যে উপযুক্ত মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেটা পাঠাতে হবে। সেই কাজটা করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কলেজের ফলপ্রকাশ আটকে যাবে।'