Firhad Hakim Controversy: রেখা পাত্রকে 'হেরো মাল' বলে এবার বিতর্কে ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি বিধানসভা উপনির্বাচনে হাড়োয়ার TMC প্রার্থী রবিউল ইসলামের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন পুরমন্ত্রী। সেই সময়ই তাঁকে রেখা পাত্রকে 'হেরো মাল' বলতে শোনা যায়। বক্তৃতার ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ফিরহাদের বিরুদ্ধে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগও জানায় বিজেপি। এরপর বিতর্কের প্রেক্ষিতেই সাফাই দিতে দেখা গেল ফিরহাদ হাকিমকে। 'আমার নেত্রী নারী, আমার মা নারী, আমার স্ত্রী নারী'
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ বলেন, 'নারীকে আমি মাতৃরূপে দেখি। হেরে ভূত, হেরো মাল- এটা হচ্ছে ভোটের ক্যান্ডিডেট, কোন নারীর ব্যাপার নয়, বিজেপির ব্যাপার। রেখা পাত্র, তাঁকে ভদ্রমহিলা বলে সম্বোধন করেছি। তারপর বলেছি যে, ৩ লাখ ভোটে হেরে গিয়েও, হেরো মালরা অর্থাৎ বিজেপি, তারা কেসে গিয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক, যদিও কারও যদি এর জন্য় খারাপ লেগে থাকে, আমি তার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত। কারণ কোনও নারীকে আমি অসম্মান করব এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না। আমার নেত্রী নারী, আমার মা নারী, আমার স্ত্রী নারী, আমার তিন কন্যা নারী, নারীকে অপমান করব, এটা কখনও হতে পারে? আর বাংলায় নারীকে সম্মান করি বলেই দুর্গাপুজো করি, কালীপুজো করি, সরস্বতী পুজো করি। নারীকে অসম্মান করাটা আমাদের বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতি নয়।'
ফিরহাদ হাকিম ঠিক কী বলেছিলেন?
ভাইরাল ভিডিওতে ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা যায়, 'সন্দেশখালিতে আমার এক বন্ধু ছিল। তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ক্যানিংয়ে। সেই বিয়ে ভেঙে দেয় ছেলের বাড়ি। তারা বলে, সন্দেশখালি থেকে মেয়ে আনলে পাড়ায় লোকেরা বলবে, এই মেয়ে হয়ত পবিত্র নয়। বাপটা হাউ হাউ করে কাঁদছে, মাটা হাউ হাউ করে কাঁদছে। আর কয়েকদিন আগে এখানে এসেছিলেন এক দাড়িওয়ালা। আরে নামটা বলেন না... দাড়িওয়ালার... নামটা হল নরেন্দ্র মোদী। কাঁদছিলেন... মেরে সন্দেশখালিকে মা, বেহেন... কী কান্না বাবা! আপনাদের এখানে প্রার্থী দিয়ে দিল সন্দেশখালি থেকে। সেই ভদ্রমহিলা কোথায়? এই তো হাজি নুরুলের বিরুদ্ধে কেস করেছিল। হেরে গেল। হেরো মাল। কয়েক লাখ ভোটে হেরে গেল। তারপর কেস করল। কিন্তু বিজেপি মানুষের পাশে আসবে না।''অভিযোগ নেয়নি পুলিশ'
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বিধাননগর দক্ষিণ থানাতে ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অভিযোগ জানাতে গেলে তাতে আমল দেয়নি পুলিশ। তাঁদের কথায়, এই থানাতেই বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে উস্কানির অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই একই থানায় ফিরহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি তাঁদের।
এরপর ইমেল মারফত বিধাননগরের কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানায় বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও এর আগে ফিরহাদ হাকিমের এই 'মাল' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপি নেতা লিখেছিলেন, 'রেখা পাত্রকে অপমান করেছেন ফিরহাদ। শুধু তাই নয়, এসসি পাউন্ড্র-ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়কেও ফিরহাদ অপমান করেছেন।''মাল বলাতে দোষ নেই...'
তৃণমূলের মদন মিত্র যদিও ফিরহাদের এই মন্তব্যে কোনও 'অন্যায়' দেখছেন না। তিনি বলেন, 'মাল বলাতে কোনও অন্যায় নেই, বিজেপি তো মাল-ই।' কুণাল ঘোষ যা বলেছেন...
কুণাল ঘোষও এই মাল-বিতর্কের প্রেক্ষিতে পুরমন্ত্রীর সমর্থনে দাঁড়ান। তিনি বলেন, ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যের ওই অংশটুকু কেটে ভাইরাল করা হচ্ছে। কিন্তু তার ঠিক আগেই যে তিনি ভদ্রমহিলা শব্দটা ব্যবহার করেছেন, সেটা দেখানো হচ্ছে না। রেখা পাত্র কী বলছেন?
সংবাদমাধ্যমের সামনে এই নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন রেখা পাত্র। তিনি বলেন, 'আমাকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, সেটা খুবই নিন্দনীয়। অপমান করা হয়েছে, তা আমার মতো খেটে খাওয়া পরিবারের মেয়েকে অপমান করা হয়েছে। এই অপমান গোটা সন্দেশখালির মা-বোনেদের অপমান।'