প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে বাংলায় বার বারই নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তবে এবার কলকাতা হাইকোর্টে সেকথা কার্যত স্বীকার করে নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আবাস যোজনার ভুরি ভুরি দুর্নীতি নিয়ে আদালতে নালিশ করেছিলেন ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের হেড়োভাঙা গ্রামের পাঁচ বাসিন্দা। সেখানে তাঁরা একের পর এক অভিযোগ করেছিলেন। তার মধ্য়ে অন্য়তম ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার ছিল এই মামলার শুনানি। আর সেখানে আবাস যোজনা নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি কার্যত মেনে নিল রাজ্য় সরকার। কার্যত আর্থিক তছরূপের বিষয়টি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারের দাবি, মামলাকারীদের দাবির সত্যতা রয়েছে। অনুসন্ধান করে দেখা হয়েছে। কার্যত অভিযোগ যে সত্য সেটা মেনে নিল সরকার। এখানেই প্রশ্ন আদালতে আসার পরে বিষয়টি বুঝতে পারল সরকার? সরকার আদালতে জানিয়েছে, পাঁচজনের টাকাই অন্যের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। সেটার সত্যতা রয়েছে। এমনকী টাকা উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। এনিয়ে কার্যত বিষ্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি।
এদিকে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন আবাসের টাকা নয়ছয় হয়েছে এটা জেনেও কেন ফৌজদারি মামলা দায়ের করল না রাজ্য সরকার? বিচারপতি জানান, আদালতের কাছে এটা আশ্চর্যজনক যে রাজ্য সব জেনেও এখনও ফৌজদারি মামলা দায়ের করেনি।
তবে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যাতে বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধান এনিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। সেই সঙ্গেই গ্রাম ও পঞ্চায়েত উন্নয়ন দফতরের সচিবকেও এনিয়ে অবগত করার জন্য জানিয়েছেন বিচারপতি। সেই সঙ্গেই ফৌজদারি মামলা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার কেন ফৌজদারি মামলা দায়ের করেনি তা নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। কারণ প্রাথমিকভাবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইচ্ছাকৃতভাবে একজনের টাকা অন্য জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটাই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও রাজ্য সরকার কেন এনিয়ে পদক্ষেপ নেয়নি, কেন জেনেবুঝে চুপ করে বসেছিল সরকার তা নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করা হল আদালতে।
তবে রাজ্য সরকারের এই স্বীকারোক্তি শুনে স্বাভাবিকভাবেই বিষ্ময় প্রকাশ করে আদালত। তবে গোটা রাজ্য জুড়েই আবাস যোজনা নিয়ে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ। একাধিক ভুয়ো নাম দেখা যাচ্ছে আবাস যোজনায়। তার মাঝেই আবাস যোজনায় টাকা নয়ছয় নিয়ে কার্যত মেনে নিল রাজ্য সরকার। সেটাও আবার হাইকোর্টের সামনে।