নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: পরকীয়ার জের! স্ত্রী ও তার ঠাকুমাকে কুপিয়ে খুন করলেন স্বামী। গতকাল, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার কালীগঞ্জ থানার মীরা আরওপির অন্তর্গত পলাশি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতেরা হলেন রিয়া হালদার (২৮) এবং সারথি হালদার (৬০)। এই ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার পুলিস অভিযুক্ত স্বামী দীনেশ হালদারকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীনেশ খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছে। পুলিস খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রেটির খোঁজ করছে। আজ, শুক্রবার, ধৃতকে কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ১৩ বছর আগে দীনেশ হালদার এবং রিয়া হালদারের বিয়ে হয়। তেহট্ট থানার সরডাঙ্গা এলাকায় রিয়া হালদারের শ্বশুরবাড়ি। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। স্বামী দীনেশ হালদার দিনমজুরের কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বেঙ্গালুরুতে কাজে গিয়েছিলেন দীনেশ। সেখানে দীনেশ ও রিয়া কাগজ কুরানির কাজ করত। বেশ কয়েক মাস সেই কাজ করেছিলেন তাঁরা। তারপর হঠাৎ রিয়া পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে দীনেশের সঙ্গে সম্পর্কে ভেঙে দেয় বেঙ্গালুরুতেই। সেখান থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে তেহট্টে একাই ফিরেছিলেন দীনেশ। রিয়া বেঙ্গালুরু থেকে নতুন প্রেমিক গণেশের সঙ্গে মুম্বইতে চলে যায়। সেখানে তারা প্রায় এক বছর ছিলেন।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রিয়া, দীনেশের কাছে ফিরতে চেয়েছিল। সেইমতো দীনেশ মুম্বই থেকে তাঁকে নিয়ে আসে। কিন্তু তেহট্টের বদলে পলাশিতে ঠাকুমার কাছে রিয়াকে রেখে আসে দীনেশ। তাদের ফের বাইরে কাজ করতে যাওয়ার কথা ছিল। সেইমতো দীনেশ তেহট্ট থেকে পলাশিতে এসেছিল রিয়াকে নিতে। কিন্তু রিয়ার ঠাকুমা তাতে আপত্তি জানান। তাই আর তেহট্টে না ফিরে পলাশিতেই রিয়ার ঠাকুমার বাড়িতে থেকে যায় দীনেশ। তখনই সে জানতে পারে রিয়া ফের গণেশের সঙ্গে ফোনে কথা বলছে। যোগাযোগ রেখেছে তাঁর সঙ্গে। তখন এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দীনেশ ও রিয়ার মধ্যে ব্যাপক বচসা হয়। অভিযোগ, রাগের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে দীনেশ, রিয়াকে একাধিকবার কোপ মারে। ঘটনাস্থলেই রিয়ার মৃত্যু হয়। ঠাকুমা সারথি হালদার রিয়াকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও দীনেশ কোপ মারে বলে অভিযোগ। সেই কোপের ঘায়েই মৃত্যু হয় সারথিদেবীর।