• তৃণমূল জমানায় গড়ে ওঠা মানসাই সেতু সিতাইয়ের ভাগ্য ফিরিয়েছে
    বর্তমান | ০৯ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিতাই (কোচবিহার): ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা। ভৌগোলিক দিক থেকে বিচার করলে মানসাই নদীর এক পাড়ে পাঁচটি ও অন্যদিকে ১২টি, মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে সিতাই বিধানসভা এলাকা। বিরাট এই এলাকায় স্বাধীনতার পর থেকে দাবি ছিল মানসাই নদীর উপরে আদাবাড়ি এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের। কিন্তু দীর্ঘ কংগ্রেস ও বাম আমলে কিন্তু সেই সেতু গড়ে ওঠেনি। ফলে হাজার হাজার মানুষকে বিরাট মানসাই বা স্থানীয় সিঙিমারি নদী পেরিয়েই দিনহাটা বা শীতলকুচি যেতে হতো। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর মানসাই নদীর উপরে ওই সেতু নির্মাণ করা হয়। আর ওই সেতুই সিতাই-এর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এক ধাক্কায় অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে। যার ফল সিতাইয়ের মানুষ যেমন পাচ্ছেন, তেমনি পাশেই থাকা শীতলকুচি ব্লকের মানুষও পাচ্ছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সিতাই উপ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে সিতাইয়ের মানসাই নদীর উপরের এই সেতুর প্রসঙ্গ চলেই আসছে। সেই সঙ্গে শাসক দল পানীয় জল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের উন্নয়নের কথা তুলে ধরছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথাও ভোটারদের জানানো হচ্ছে।


    কিন্তু সকল বিরোধী দলগুলি মানসাই সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব শাসক দলকে দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এটা বাম-কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বাম আমলেই সেতুটির টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু ২০১১ সালে বামেরা হেরে যাওয়ায় পরে তৃণমূল আমলে এটি গড়ে ওঠে। কিন্তু মানসাইয়ের কামতেশ্বরী সেতু যে শাসক দলকে সিতাইতে তৃণমূলকে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ দেবে একথা একপ্রকার নিশ্চিত। এছাড়াও সিতাইয়ের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের চেহারাও বাম জমানার তুলনায় আমূল বদলে গিয়েছে।


    কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, মানসাইয়ের উপর সেতু সিতাইয়ের দুঃখমোচন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ওই নদী পেরিয়েই মানুষকে যাতায়াত করতে হতো। কংগ্রেস জমানার ৩০ বছর ও বাম জমানার ৩৪ বছরে প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে সেতুর শিলান্যাস করা হতো। কিন্তু সেতুর কাজ হতো না। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। ওই বছরেই ১০ এপ্রিল সেতুর কাজের সূচনা হয়। সিতাইবাসী দীর্ঘদিনের একটা কষ্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন। 


    সিতাইয়ের বিজেপি প্রার্থী দীপককুমার রায় বলেন, মানসাই সেতু একদিনে হয়নি। দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। বাম জমানায় এর টেন্ডার হয়েছিল। সেই সময় নির্বাচন ঘোষণার জন্য কাজ হয়নি। সিতাইয়ের কংগ্রেস প্রার্থী হরিহর সিংহ রায় বলেন, এঁরা তথ্য জানেন না। মহম্মদ ফজলে হকের জীবনের এটা একটা স্বপ্ন ছিল। শেষ বামফ্রন্টে ক্ষিতি গোস্বামী এই সেতু করেছেন। সেই সময় এঁরা সেতু গড়ার সমালোচনা করেছিল। বাম জমানায় আমাদের বিধায়কের সুপারিশে এই সেতু হয়েছে। এতে এঁদের কোনও কৃতিত্ব নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)